ঘি-তে লুকিয়ে সুস্থ থাকার বীজমন্ত্র
সুস্থ থাকতে গেলে ঘিয়ের জুড়ি মেলা ভার। এতটাই তার গুণ। ঘিয়ের কত যে গুণ তা জানলে অবাক হবেন অনেকেই।
ভারতীয় সংস্কৃতিতে ঘি এক আদি খাদ্য। চার্বাক দর্শনেও ঘি-এর উল্লেখ রয়েছে। প্রাচীন পুঁথিতেও ঘি-এর উল্লেখ পাওয়া যায়। ভারতের অনেক জায়গায় ঘি মঙ্গলদায়ক। রীতিমত অধ্যাত্মের সঙ্গে ঘিকে জুড়ে দেওয়া হয়েছে ভারতীয় দর্শনে।
ভারতের এই ঘৃত বা ঘি খাওয়ার প্রচলন কিন্তু অন্য অনেক দেশেই রয়েছে। মিশরে এই ঘি হল ‘সামনা’, আবার ইরানে সেটাই ‘রোগান’, মধ্যপ্রাচ্যে ‘স্যামন’, উগান্ডায় সেটাই ‘সামুলি’। ঘিয়ের প্রচুর গুণ রয়েছে।
খাঁটি ঘিতে রয়েছে প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন, খনিজ। রয়েছে ভিটামিন এ, ই, কে২, ডি, ক্যালসিয়াম, সিএলএ এবং ওমেগা-৩।
৩ রকমের ঘি রয়েছে। একটি হল সাধারণ ঘি যা গরু বা মোষের থেকে পাওয়া মাখন থেকে তৈরি হয়। অন্যটি হল এ২ ঘি যা গির গরু ও লাল সিন্ধি গরুর দুধ থেকে তৈরি হয়। তৃতীয়টি হল বিলোনা ঘি। এই বিলোনা ঘি দেশি গরুর দুধ থেকে তৈরি খাঁটি ঘিয়ের মধ্যে অন্যতম।
ঘিয়ের অনেক উপকার রয়েছে। দুধের মধ্যে এক চামচ ঘি, একটু হলুদ ও একটু মরিচ গুঁড়ো দিয়ে পান করলে পাচন প্রক্রিয়ায় তৈরি বিষাক্ত জিনিস সাফ হয়, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং বাড়িয়ে দেয় রোগ প্রতিরোধ শক্তি।
ঘি এনার্জি বাড়ায়, ওজন কমায়। মন ঠিক রাখতেও এর জুড়ি নেই। ঘিতে ভিটামিন কে২ থাকে। যা হাড়কে ক্যালসিয়াম শোষণে সাহায্য করে। গাঁটের ব্যথা কমায়।
একটু হলুদ ও একটু মরিচ গুঁড়ো দিয়ে ঘি পান করলে মানসিক চাপ কমে, ভাল ঘুম হয়। এছাড়া চামড়ার উজ্জ্বলতা বাড়ায় ঘি। ঘিতে থাকা সিএলএ কোলেস্টেরল কমাতে ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কার্যকরি ভূমিকা নেয়।
তবে এটাও মনে রাখা দরকার যে ১ চামচ বা ৫ গ্রাম ঘিতে থাকে প্রচুর ফ্যাট ও ক্যালোরি। তাই ডায়াবেটিক হলে বা ওবেসিটির সমস্যা থাকলে বা হাইকোলেস্টেরল বা হৃদযন্ত্রের সমস্যা থাকলে ঘি খাওয়ার পরিমাণ সম্পর্কে সতর্ক থাকা জরুরি। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা