শোধ নেওয়ার খাওয়াদাওয়া, ধাক্কা সামাল দিতে নাভিশ্বাস হোটেল রেস্তোরাঁর
নাভিশ্বাস ওঠার ধাক্কা সামাল দেবেন নাকি আনন্দ করবেন সেটা পুজোর ৭ দিনে স্থির করে উঠতে পারেননি কলকাতার হোটেল ও রেস্তোরাঁ মালিকরা।
গতবছর পুজোর সময় খাওয়া দূরে থাক ঠাকুর পর্যন্ত ভাল করে দেখতে পারেননি বহু মানুষ। বাড়ি থেকে করোনার মধ্যে বার হওয়ার ঝুঁকি নিতে পারেননি তাঁরা। করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউ মিলিয়ে প্রায় ১ বছর ৭ মাস পর এবার পুজোয় তাই যেন সব বাঁধন ছিঁড়ে ফেলতে চেয়েছেন তাঁরা।
করোনা বিদায় নিয়েছে এমনটা নয়। তবে আর ঘরে বেঁধে রাখা যায়নি মানুষজনকে। যার ঢেউ গিয়ে পড়েছিল হোটেল রেস্তোরাঁর ওপর।
কলকাতার এমন কোনও কোণা নেই যেখানে গত একটা সপ্তাহে এমন কোনও দিন গেছে যেদিন দোকানের দরজা খোলার পর থেকে মানুষের ঢল নামেনি।
এমনকি অধিকাংশ রেস্তোরাঁ একটা সময়ের পর দোকানের দরজা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে। খাবার শেষ হয়ে যাওয়ায় দোকানের বাইরে তখনও ভিড় থাকা সত্ত্বেও তাদের দোকান বন্ধ করতে হয়েছে।
একই ছবি দেখা গেছে পার্ক স্ট্রিটের ট্রিঙ্কাস থেকে মোকাম্বো, পিটার ক্যাট, পিটা হু, ওহ ক্যালকাটা, মেনল্যান্ড চায়না, ফ্লেম অ্যান্ড গ্রিল সহ প্রায় সব রেস্তোরাঁয়।
হোটেল রেস্তোরাঁ সংগঠন বলছে তারা জীবনে কখনও এত মানুষের ঢল পুজোর সময় দেখেনি। তারা দোকান খোলা থেকে বন্ধ করা পর্যন্ত এমন কোনও সময় যায়নি যখন একটাও টেবিল ফাঁকা থেকেছে। এমনকি ভিড় সামাল দিতে অতিরিক্ত চেয়ার টেবিলের বন্দোবস্তও করতে হয়েছে তাদের।
সারাদিনে একটা মুহুর্ত তারা দম নেওয়ার সময় পায়নি। খাবার থেকে পানীয় কিছুই পড়তে পায়নি। রান্নাঘর চাঁচাপোঁছা করেও মানুষের খাবারের চাহিদা মেটানো যায়নি।
এক রেস্তোরাঁ কর্তার মতে এবার পুজোর ষষ্ঠী থেকে দ্বাদশী পর্যন্ত কার্যত মানুষ যা পেয়েছেন তাই খেয়েছেন রেস্তোরাঁয়। প্রায় ১৯ মাস রেস্তোরাঁয় না ঢুকতে পারার প্রতিশোধ যেন এই পুজোতেই তাঁরা উশুল করে নিয়েছেন।
রেস্তোরাঁ মালিকরা জানাচ্ছেন তাঁদের অভিজ্ঞতায় তাঁরা দেখেছেন করোনার আগে পুজোয় খাবার বিক্রি দ্বিগুণ হত। এবার কিন্তু সে সব হিসাব ছাপিয়ে গিয়েছে।
এবার খাবার বিক্রি করে অতিরিক্ত ৩০ শতাংশ লাভের মুখ দেখেছেন তাঁরা। যা কখনও হয়নি। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা