মানুষটা মৃত্যুশয্যায়, মৃত্যুর দিন গুনছেন। আর কটাদিনই বা বাঁচবেন। সেই কটাদিন তাঁকে বন্দিদশা থেকে মুক্তি দিক সরকার। বিদেশ থেকে বহু মানুষ চিনের সরকারের কাছে এই আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু সে কথায় কান দেয়নি চিন। শান্তির জন্য নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত লিউ জিয়াওবো-কে আটকে রেখেছিল কারাগারের অন্ধ কুঠুরিতে।
১৯৮৯ সালে চিনের তিয়েনআনমেন স্কোয়ারের আন্দোলন থেকে চিনা সরকারের বিরুদ্ধে বারবার গর্জে ওঠা। দেশে গণতন্ত্রকে সঠিক অর্থে প্রতিষ্ঠার পক্ষে আপোষহীনভাবে সওয়াল করে যাওয়া লিউকে ২০০৮ সালে মানবাধিকার নিয়ে বক্তব্য রাখা ও চিনের রাজনৈতিক ব্যবস্থার সংস্কার চেয়ে লেখা প্রকাশের অভিযোগে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২০০৯ সালে ১১ বছরের জেল হয় তাঁর। ফলে ২০১০ সালে অসলোতে খালি চেয়ারকেই নোবেল পুরস্কার দিতে হয় নোবেল কমিটিকে। লিভার ক্যানসারে জর্জরিত লিউকে জার্মানি তাদের দেশে চিকিৎসা করাতে চেয়ে চিন সরকারের কাছে আবেদন জানায়। কিন্তু সে আবেদন গ্রাহ্য হয়নি। বহু দেশ থেকে আবেদন জানানো হয় লিউকে জীবনের শেষ দিনগুলোয় মুক্তি দেওয়ার। কিন্তু তা হয়নি। বরং সম্প্রতি জেলেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতির পর হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও রাখা হয়েছিল কড়া নিরাপত্তায়। এমনকি শেষ ৩ দিন ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে শয্যাশায়ী নিউকে নিয়ে কোনও ঝুঁকি নেয়নি চিনা সরকার। রাখা হয়েছিল দুর্ভেদ্য নিরাপত্তায়। অবশেষে পুলিশের ঘেরাটোপেই চলে গেলেন লিউ। তবে ছেড়ে গেলেন অনেক কিছু। যা হয়তো আগামী দিনের চিনকে অন্য ভাবে ভাবাবে।