ব্রিটিশ পার্লামেন্টে সন্ত্রাসবাদী হামলার ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৫, এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৫ জন। এদিকে গত বুধবারের ঘটনার পর থেকেই লণ্ডন জুড়ে ব্যাপক ধরপাকর শুরু করেছে পুলিশ। হামলার ঘটনায় যুক্ত সন্দেহে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে ৭ জনকে। তল্লাশি অব্যাহত। হামলায় আইএস যোগও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। বুধবার বিকেলের দিকে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয়ে ঘেরা ওয়েস্টমিনস্টার ব্রিজের ওপর আচমকা একটি কালো গাড়ি বেপরোয়া গতিতে পথচলতি মানুষজনকে ধাক্কা মারেতে মারতে এগোতে থাকে। গাড়ির ধাক্কায় আহত হন ১০ জন পথচারী। তারপর একসময়ে গাড়িটি ব্রিজ পার করে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের কাছে একটি রেলিংয়ে ধাক্কা মেরে থেমে যায়। গাড়ি থেকে ছোরা হাতে বেরিয়ে আসে এক ব্যক্তি। তারপর ওই ছোরায় এক কর্তব্যরত পুলিশকে কোপ মেরে ছুটতে থাকে পার্লামেন্ট হাউসের দিকে। তাক লক্ষ করে গুলি চালান স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের সুরক্ষাকর্মীরা। গুলিতে রক্তাক্ত অবস্থায় ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পরে আততায়ী। সেখানেই তার মৃত্যু হয়। ৪টি গুলি লাগে তার গায়ে। এরপর কোনও ঝুঁকি না নিয়ে পার্লামেন্টের দরজা বন্ধ করে দেন সুরক্ষাকর্মীরা। নির্দেশ দেন কোনও সাংসদ বা সংসদের কর্মীরা যেন বাইরে আসার চেষ্টা না করেন। ফলে পার্লামেন্টের মধ্যেই আটকে পড়েন ২০০-র ওপর সাংসদ।
এদিকে অদূরেই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর দফতর। ফলে প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে সুস্থ আছেন কিনা তা নিয়ে খোঁজ শুরু হয়। জানানো হয় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী সম্পূর্ণ সুরক্ষিত। তাঁকে একটি রুপোলি রংয়ের জাগুয়ারে করে কোনও অজ্ঞাত সুরক্ষিত স্থানে নিয়ে যায় সুরক্ষাবাহিনী। এদিকে ঘটনার পর গোটা এলাকা ঘিরে ফেলে পুলিশ। শুরু হয় তল্লাশি। নতুন করে কোনও সন্ত্রাসবাদী হামলার আশঙ্কা রয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হতে চিরুনি তল্লাশি চালায় তারা। ওয়েস্টমিনস্টার ব্রিজ হয়ে যাওয়া সব গাড়ি অন্য রাস্তা দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। এলাকায় ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। এদিকে ওয়েস্টমিনস্টার ব্রিজ বা পার্লামেন্ট চত্বর অত্যন্ত কড়া সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে থাকে। কার্যত গোটা লন্ডন শহরেই সুরক্ষা বন্দোবস্ত আঁটসাঁট। সেখানে এক ব্যক্তি পার্লামেন্টের কাছে এভাবে ছুরি নিয়ে ঢুকে হামলা চালাল, একজন গাড়ি নিয়ে বেপরোয়া গতিতে ওয়েস্টমিনস্টার ব্রিজের পথচারীদের আহত করল। এ কেমন করে সম্ভব তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। প্রশ্নের মুখে পড়েছে সুরক্ষা বন্দোবস্তও।