রাত তখন সাড়ে ১০টা। শনিবাসরীয় লন্ডনে নাইট লাইফ জমে উঠতে শুরু করেছে। লন্ডন ব্রিজের ওপর মানুষের ঢল। একটা রঙিন উইকএন্ডের হুল্লোড়ের পারদ চড়ছে। ঠিক সেই সময়েই আনন্দের সবটুকু নিমেষে শুষে নিয়ে সাক্ষাৎ যমদূতের মত ব্রিজের ওপর হাজির হল একটা সাদা ভ্যান। ভিড়ের মধ্যে দিয়ে প্রায় ৫০ কিলোমিটার বেগে ছুটে আসা সেই ভ্যানের ধাক্কায় তখন বেসামাল সকলে। তারমধ্যেই কিছু বুঝে ওঠার আগেই প্রায় ৬ জনকে ধাক্কা মেরে ফুটপাথে উঠে দাঁড়িয়ে যায় ঘাতক ভ্যান। লাফ দিয়ে নেমে আসে ৩ মূর্তিমান সন্ত্রাস! হাতে ছুরি নিয়ে আশপাশের কয়েকজনকে জখম করে সেখান থেকে ছুটে ৩ জন ঢুকে পড়ে ব্রিজের পাশের একটি নাইট হাবে। সেখানেও তখন উল্লাসের পারদ তুঙ্গে। আচমকাই সেখানে ঢুকে ৩ জন সময় নষ্ট করেনি। ধারালো অস্ত্র হাতে ঝাঁপিয়ে পড়ে সেখানে উপস্থিত লোকজনের ওপর। যাকেই সামনে পায় তাকেই ধারালো কোপ বসিয়ে দেয় তারা। আতঙ্কে আর্তনাদ করতে থাকেন অনেকে। পালানোর জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, গুলির শব্দও পান তাঁরা। মুহুর্তে নাইট হাবে পৌঁছয় পুলিশ। শুরু হয় জঙ্গি পুলিশ গুলির লড়াই। প্রথমে জঙ্গিদের গায়ে বাঁধা জ্যাকেট দেখে পুলিশ মনে করে ওগুলো বিস্ফোরক ভর্তি জ্যাকেট। কিন্তু পরে দেখা যায় তা নয়। ওটা পুলিশকে ধোঁকা দেওয়ার কৌশল। পুলিশর গুলিতে ঘটনাস্থলেই ৩ জঙ্গির মৃত্যু হয়। এই হামলায় ৬ জন সাধারণ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। ৪৮ জন গুরুতর আহত। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পর এদিন বৈঠক ডাকেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে। পরপর লন্ডনে হামলার জেরে লন্ডনবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এই হামলার কড়া সমালোচনা করে ব্রিটেনকে সবরকম সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ঘটনার কড়া নিন্দা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও।