পাওয়ার গ্রিডকে কেন্দ্র করে মাস তিনেক আগে আগুন জ্বলেছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে। তখন সেখানে যাওয়া সম্ভব না হলেও এদিন রাস্তার শিলান্যাসকে কেন্দ্র করে ভাঙড়ে জনসভা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। জানিয়ে দিলেন ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিড হলে মাতৃগর্ভে থাকা সন্তান নষ্ট হওয়া বা চাষের জমিতে ভরে থাকা ফসল নষ্ট হওয়ার যে আতঙ্ককে কেন্দ্র করে গ্রামে গ্রামে আন্দোলন দানা বেঁধেছিল তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এটা আসলে প্রোমোটিং করার চক্রান্ত। এদিন নাম করে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, বৈদিক ভিলেজ বা উন্নয়ন গ্রুপের মত ৩-৪টি প্রোমোটিং সংস্থা ভাঙড়ের কৃষিজমি কম দামে কিনে এখানে বিশাল অট্টালিকা দাঁড় করাতে চায়। তাই গ্রামের মানুষকে ভুল বুঝিয়ে জমি হাতানোর চেষ্টা করছে তারা। পাশাপাশি মাওবাদী গ্রামবাসীদের ভুলিয়ে রাস্তা কাটার ছবি তুলে টাকা তুলছে। আন্দোলনের নামে কলকাতা যাওয়ার কথা বলে টাকা তুলছে। গ্রামবাসীদের এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর অনুরোধ করেন তিনি। সাফ জানিয়ে দেন ভাঙড়ে আন্দোলনের নামে যাঁরা বাড়িতে বোমা, বন্দুক মজুত করে রেখেছেন তাঁরা আত্মসমর্পণ না করলে তাঁদের প্রশাসন খুঁজে বার করে কড়া পদক্ষেপ করবে। ভাঙড়ে দুই তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম ও কাইজার আহমেদের দ্বন্দ্ব স্থানীয়দের কাছে সুপরিচিত। সেকথা মাথায় রেখে মুখ্যমন্ত্রী এদিন গ্রামবাসীদের খোলাখুলিই বলেন যদি এদের ২ জনের কারও বিরুদ্ধে তাঁদের কোনও বক্তব্য থাকে তবে তাঁরা অনায়াসে সেই অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীকে জানাতে পারেন। তিনি ব্যবস্থা নেবেন। কিন্তু গ্রামে অশান্তি ছড়ানো তিনি বরদাস্ত করবেন না। এদিন মুখ্যমন্ত্রী রাজ্য জুড়ে নতুন ১৮ হাজার কিলোমিটার গ্রামের রাস্তা তৈরির শিলান্যাস করেন। নির্দিষ্ট রাস্তাগুলিতে এদিন ইটও ফেলা হয়। ভাঙড় থেকে এই উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী স্থানীয় নেতৃত্বকে বকুনি দেন। কারণ তাঁর নির্দেশ ছিল যেখানে যেখানে নতুন রাস্তা তৈরি হবে সেখানে সেখানে যেন সাংসদ, বিধায়ক থেকে স্থানীয় নেতৃত্ব হাজির থাকেন। তা না করে মুখ্যমন্ত্রীর জনসভায় তাঁরা কেন সে প্রশ্নের মুখেও পড়তে হয় স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বকে। এদিন দক্ষিণ ২৪ পরগনাকে নির্মল জেলা হিসাবে ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। এই নিয়ে রাজ্যের ৬টি জেলা এই স্বীকৃতি পেল।