পাহাড় থেকে বাহিনী প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত বিজেপি পার্টি অফিসের, নাকি কেন্দ্রের? এদিন মোর্চা নেতা বিনয় তামাংদের সঙ্গে পাহাড় নিয়ে তৃতীয় বৈঠকের শেষে এভাবেই পাহাড় থেকে কেন্দ্রের বাহিনী প্রত্যাহারের ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, কদিন আগে পাহাড়ে এক বিজেপি নেতা গিয়েছিলেন। তারপরই কেন্দ্র বাহিনী প্রত্যাহার করে নিল। তাঁর আরও দাবি, বিজেপির তরফ থেকে রিপোর্ট পেয়েই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যেখানে পাহাড় আস্তে আস্তে ছন্দে ফিরছে, কিন্তু সেখানে কিছু লোক অশান্তি পাকানোর চেষ্টা চালাচ্ছে, সেখানে বিজেপি তাদের মদত দিচ্ছে। পাহাড়ে তল্লাশি চালিয়ে একে-৪৭ উদ্ধার হয়েছে, জিলেটিন স্টিক উদ্ধার হয়েছে। এই অবস্থায় বাহিনী প্রত্যাহার করার আগে রাজ্যের সঙ্গে একবারও আলোচনা করার প্রয়োজন বোধ করেনি কেন্দ্র। এ নিয়ে রাজ্যের তরফে কেন্দ্রকে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলেও এদিন জানান মুখ্যমন্ত্রী।
ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী এদিন নবান্নে বলেন, পাহাড় থেকে এভাবে বাহিনী প্রত্যাহার করে নেওয়া অগণতান্ত্রিক। কেন্দ্র দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো মানছে না। তাদের কাছে বিজেপি পার্টি অফিসই সবচেয়ে বড়। সেখান থেকে নির্দেশ এলে, সেইমত কাজ করছে কেন্দ্র। পাহাড়ে অশান্তি জিইয়ে রাখায় বিজেপির এক মন্ত্রীর হাত আছে বলেও দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, দার্জিলিং সিটটা নিজেদের হাতে রাখার জন্য বিজেপি যা ইচ্ছে তাই করছে।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন সরাসরি দাবি করেন, বিমল গুরুংপন্থীদের কাছে প্রচুর অস্ত্র পৌঁছচ্ছে নেপাল ও উত্তরপূর্ব ভারতের জঙ্গি সংগঠনগুলোর কাছ থেকে। তাদের অস্ত্র সরবরাহে বিদেশি শক্তির হাত আছে। পাশাপাশি এদিন পাহাড় নিয়ে বৈঠক ফলপ্রসূ ও ইতিবাচক হয়েছে বলে দাবি করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, পাহাড়ে শান্তি ফেরাতে ফের চতুর্থ দফার বৈঠক হবে। তা হবে আগামী ২১ নভেম্বর। দার্জিলিংয়ের পিনটেল ভিলেজে হবে চতুর্থ বৈঠক।
এদিন বিনয় তামাং বৈঠকের পর বলেন, পাহাড়ে তাঁরা স্থায়ী সমাধান চান। সেই লক্ষ্যে ফের বৈঠক হবে। তাঁরা ত্রিপাক্ষিক বৈঠক নিয়েও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। এছাড়া গত ৪ মাসে পাহাড়ে যাঁদের এই আন্দোলনে মৃত্যু হয়েছে, সেসব পরিবারকে রাজ্য সরকারের তরফে সাহায্য দেওয়ার আবেদনও করেছেন তিনি। কর্মীদের কাজে ফেরা ও বকেয়া মাইনে মিটিয়ে দেওয়ার জন্যও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তাঁরা আবেদন জানিয়েছেন বলে জানান বিনয় তামাং।