প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে এক্সপায়ারিবাবু বলে কটাক্ষ করে দিনহাটায় এদিন সভা শুরু করেন মমতা। বলেন, তিনি আর নরেন্দ্র মোদীকে প্রধানমন্ত্রী বলবেন না। তাঁকে এক্সপায়ারিবাবু বলেই ডাকবেন। দুপুরে মাটিগাড়ায় সভা করেছেন নরেন্দ্র মোদী। তারপর তিনি যখন কলকাতায় ব্রিগেডে ভাষণ দিচ্ছেন তখনই বিকেলে কোচবিহারের দিনহাটায় তাঁর প্রথম নির্বাচনী জনসভা শুরু করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুপুরের উত্তর যে বিকেলে তিনি দেবেন তা বোঝাই যাচ্ছিল। হলও তাই। এদিন এক এক করে মোদীর করে যাওয়া কটাক্ষের উত্তর দেন মমতা।
শুরু করেন ছিট মহলে জমি সমস্যা মেটানো দিয়ে। তারপর কাস্ট সার্টিফিকেট প্রদান নিয়ে তাঁর সরকারের উদ্যোগী ভূমিকার কথা তুলে ধরেন। এদিন প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেছিলেন রাজ্য সরকার গরীবদের দেখেনা। মুখ্যমন্ত্রী এদিন প্রত্যুত্তরে বলেন, ক্ষমতা থাকলে মোদী তাঁর সঙ্গে এ নিয়ে সামনা সামনি বিতর্কে আসুন। তাঁর স্লোগান ‘টুকলি’ করে প্রধানমন্ত্রী এদিন জগাই-মাধাইয়ের সরকার চলছে বলে কটাক্ষ করেছেন। এমনই দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী হিটলারি কায়দায় মিথ্যা বলেন বলেও দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কৃষি বন্ধু প্রকল্পও প্রধানমন্ত্রী টুকলি করেছেন বলে এদিন দাবি করেন মমতা।
এদিন কাগজ নিয়ে এসে তা তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন বিজেপি যাদের টিকিট দিচ্ছে তাদের কেউ লুটেরা। কারও বিরুদ্ধে অস্ত্র বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। এদিন প্রধানমন্ত্রী চাবাগানের শ্রমিকদের প্রতি সমব্যথী বলে জানান। তাঁদের সব খাবর রাখেন ও তাঁদের সমস্যা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা হচ্ছে বলে জানিয়ে যান। তারপর দিনহাটার সভায় মমতা প্রশ্ন করেন, বিধানসভা নির্বাচনের সময় এসে ৭টি চা বাগান খোলার কথা বলে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তার কী হল?
ব্রিগেডে প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় এবার ছাউনির বন্দোবস্ত করেছিল বিজেপি। যাকে হ্যাঙ্গার বলা হয়। এদিন তা নিয়ে খোঁচা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সাধারণ মানুষের টাকা নিয়ে বিজেপি কোটি কোটি টাকা খরচ করে সভা করছে। এমনকি ভোটারদের টাকা দিয়ে বিজেপি ভোট কেনার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। এক্ষেত্রে ভোটাররা কী করবেন সে বিষয়ে ঘুরিয়ে পরামর্শ দিতেও শোনা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে।
আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প মুখ্যমন্ত্রী আটকে দেওয়ায় এ রাজ্যে বহু মানুষ ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনাখরচে চিকিৎসার সুবিধা ভোগ করতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেন প্রধানমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী পাল্টা বলেন, ওটা ‘ফালতু’ প্রকল্প। ওই প্রকল্পে রাজ্য সরকারকে ৪০ শতাংশ টাকা দিতে হত। তিনি রাজ্যের সিংহভাগ মানুষের জন্য সে জায়গায় স্বাস্থ্য সাথী করে দিয়েছেন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
দিনহাটার মঞ্চে সেখানকার তৃণমূল প্রার্থী পরেশ অধিকারীকে দাঁড় করিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন তৃণমূলকে ভোট দিন। তিনি এও বলেন, কেউ পরেশ অধিকারীকে ভোট দিচ্ছেননা। আসলে তাঁকে ভোট দিচ্ছেন। প্রসঙ্গত এদিন একই কথা শোনা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর গলাতেও। তাঁরও বক্তব্য বিজেপি প্রার্থীদের ভোট দিয়ে আসলে নরেন্দ্র মোদীকে ভোট দিন সকলে। এদিন মমতার সভায় হাজির ছিলেন চিত্র তারকা তথা বসিরহাটের তৃণমূল প্রার্থী নুসরত জাহান।