এখানে এক গদ্দার লোকসভার টিকিট চেয়েছিল, দিইনি। কেন দেবো? কোনও উন্নয়ন করবে না! কেবল গুণ্ডামি করবে। বৃহস্পতিবার লোকসভা ভোটের প্রচারে ভাটপাড়ার জনসভা থেকে এভাবেই অর্জুন সিংকে নিশানা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়ে ব্যারাকপুর লোকসভা আসনে বিজেপি প্রার্থী হিসাবে দাঁড়িয়েছেন অর্জুন সিং। ভাটপাড়াকে তাঁর খাসতালুক হিসাবে মেনে নেন অনেকেই। সেই অর্জুনগড়ে দাঁড়িয়ে এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী বলেন সেদিকে চেয়েছিলেন অনেকেই। সেখানেই অর্জুন সিংয়ের নাম একবারও মুখে আনলেন না মমতা। তবে নিশানা করলেন বারবার।
মমতা এদিন অর্জুন সিংকে নিশানা করেই বলেন, দলে ২-১ জন গদ্দার থাকেই। তেমনই এক গদ্দার হিসাবে নাম না করে অর্জুন সিংকে ব্যাখ্যা করেন তিনি। অর্জুনকে গুণ্ডা বলেও বারবার চিহ্নিত করেন। কিন্তু সেই গুণ্ডামি তিনি বরদাস্ত করবেন না বলে এদিন জানিয়ে দেন। ভাটপাড়ার মানুষকে আশ্বস্ত করে মমতা বলেন আগামী দিনে এই এলাকার উন্নয়নের বিষয়টি তিনি নিজেও দেখবেন।
ব্যারাকপুর লোকসভা আসনে তৃণমূল প্রার্থী এবারও দীনেশ ত্রিবেদী। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনের আগে যখন টিকিট বণ্টন করছিল তৃণমূল তখন ভাটপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক অর্জুন সিং ব্যারাকপুর আসনের টিকিট চান। সে টিকিট তৃণমূল নেতৃত্ব তাঁকে না দিয়ে ফের দীনেশ ত্রিবেদীকেই প্রার্থী করে। সেই ক্ষোভেই দল ছাড়েন অর্জুন সিং। বিক্ষুব্ধ অর্জুন সিংকে সেই সময় বিজেপিতে টানতে ঝাঁপান তৃণমূল ছেড়ে আগেই বিজেপিতে যোগ দেওয়া নেতা মুকুল রায়। যদিও এলাকায় মুকুল বনাম অর্জুন দ্বৈরথের কথা প্রচলিত। কিন্তু এই অবস্থায় এঁরা দুজনেই হাত মেলান। বিজেপিতে যোগ দেন অর্জুন সিং। বিজেপি তাঁকে ব্যারাকপুর থেকে প্রার্থী করে।
ভাটপাড়া বিধানসভা আসনটির বিধায়ক অর্জুন সিং দল পরিবর্তন করায় সেখানে বিধানসভা উপনির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে তৃণমূল মদন মিত্রকে প্রার্থী করেছে। এদিন মদন মিত্রকেও ভাটপাড়া থেকে জেতানোর ডাক দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখানে মদন মিত্রের বিরুদ্ধে বিজেপি প্রার্থী অর্জুন সিংয়ের ছেলে পবন কুমার সিং। বাবা ও ছেলের জামানত জব্দ করার জন্য ভাটপাড়ার মানুষকে আহ্বান জানান মমতা।
বৃহস্পতিবার ভাটপাড়ার জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও নিশানা করতে ছাড়েননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মোদী ৫ বছরে কিছুই করেননি বলে দাবি করেন মমতা। নরেন্দ্র মোদী শ্রীরামপুরের সভা থেকে দাবি করেছিলেন তাঁর সঙ্গে তৃণমূলের ৪০ জন বিধায়ক যোগাযোগ রাখছেন। এমনও ইঙ্গিত দেন যে ভোটের পর তাঁরা বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন। সেই প্রসঙ্গে টেনে মমতা এদিন অভিযোগ করেন রাজ্যে এসে নরেন্দ্র মোদী ঘোড়া কেনাবেচা করছেন। যে ৪০ বিধায়কের কথা প্রধানমন্ত্রী বলেছেন তার একজনেরও নাম বলতে বলেন তৃণমূল নেত্রী।