লোকসভা ভোটের ধাক্কা, কাটমানি ফেরতের দাবিতে ছড়িয়ে পড়া আন্দোলন। এসবের পর রবিবার ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের বার্ষিক সভা হয়ে ওঠা ২১শে জুলাইয়ের শহিদ স্মরণ। যেখান থেকে দলের কর্মীদের একটা আন্দোলনের রূপরেখা, তাঁদের কর্মসূচির ক্যালেন্ডার দিয়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার তাই এই মঞ্চ থেকে তৃণমূল নেত্রী কী বার্তা দেন সেদিকে চেয়েছিলেন দলীয় কর্মীরা। এমনকি বিরোধীরাও নজর রাখছিলেন এই সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যের দিকে।
লোকসভায় বিজেপির কাছে বড় ধাক্কার পর এদিন কিন্তু রাজ্যে লোকসভায় বিজেপির উত্থানকে কারচুপি বলেই চিহ্নিত করেছেন মমতা। ইভিএম কারচুপি, টাকা ছড়ানো থেকে নির্বাচন কমিশন, কেন্দ্রীয় পুলিশকে কাজে লাগিয়ে ভোট দখল করেছে বিজেপি বলে দাবি করেন তিনি। মমতার দাবি, ইভিএমে ভোট কারচুপি হয়েছে। এটা সম্ভব। ব্যালট হলে তা হত না। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জাপানের মত দেশেও ভোটে ইভিএম ব্যবহার হয়না বলে উদাহরণ টেনে মমতা বলেন ওখানে ইভিএমে ভোট হয়না কারণ ইভিএম মেশিনে কারচুপি সম্ভব। তিনি এদিন জানান, পৌর নির্বাচনে ব্যালট ব্যবহারের জন্য নির্বাচন কমিশনকে বলবেন তিনি। দেশ জুড়েই সব ধরনের ভোটে ইভিএম তুলে দিয়ে ব্যালটে ভোট করার দাবি করেন তৃণমূল নেত্রী।
মমতা এদিন বলেন, এতকিছু করেও বিজেপি বেশ কিছু লোকসভা আসনে সামান্য ভোটের ব্যবধানে জিতেছে। আর তাতেই তারা চিৎকার করতে শুরু করেছে। তৃণমূলের পার্টি অফিস দখল করছে। তাঁর হুমকি, তৃণমূল পাল্টা দিলে কী হবে? মমতার অভিযোগ ২১শে জুলাইয়ের সভায় আসতে গিয়ে তৃণমূল কর্মীরা আক্রান্ত হয়েছেন। ট্রেনও বন্ধ করা হয়। যাতে সকলে না আসতে পারেন। তিনি এদিন কটাক্ষের সুরেই বলেন, এখানে অনেক বিজেপি নেতাকে দেখছেন যাঁদের কদিন আগেও কেউ চিনত না। ২ বছর আগেও তাঁদের নাম কেউ জানত না। এঁদের বাইরের নেতা বলে কটাক্ষ করেন তিনি। বিজেপি নেতাদের ল্যাটামাছ, কুচোচিংড়ি বলেও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি মমতা।
কাটমানি ফেরতের কথা মমতাই বলেছিলেন দলীয় কর্মীদের। সেটাই এখন রাজ্যে বিজেপির আন্দোলনের দিশা হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে বিভিন্ন জেলায় তৃণমূল নেতা কর্মীরা কাটমানি নিয়ে চাপে পড়েছেন। অনেক নেতা কর্মী তাঁদের আমজনতা থেকে বিজেপির চাপের মুখে পড়ার জন্য খোদ দলনেত্রীর কাটমানি ফেরতের বার্তাকে দায়ী করছিলেন। এদিন দলীয় নেতা কর্মীদের এই অবস্থা থেকে বার করে আনতে পাল্টা দাওয়াইয়ের রাস্তার হদিস দিলেন মমতা।
দলীয় কর্মীদের এদিন তিনি বলেন, বিজেপিকে পাল্টা ব্ল্যাক মানি ফেরতের জন্য চাপ দিতে। আন্দোলন গড়ে তুলতে। যে ১৫ লক্ষ টাকা করে দেওয়ার কথা খোদ প্রধানমন্ত্রী ২০১৪ সালে বলেছিলেন সেই টাকা কোথায় তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে। সেই টাকা ফেরত চাইতে। নোটবন্দিতেও বিজেপি টাকা নিয়েছে বলে দাবি করে মমতা বলেন, নোটবন্দির টাকাও ফেরত চান বিজেপি নেতাকর্মীদের কাছে।