হুগলির কোন্নগরে হীরালাল পাল কলেজের বাংলার অধ্যাপক সুব্রত চট্টোপাধ্যায়কে নিগ্রহের ঘটনা নিয়ে তোলপাড় শিক্ষামহল। অভিযোগ গত বুধবার ওই কলেজের ছাত্র সংসদে ক্ষমতায় থাকা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যদের সঙ্গে ওই কলেজের এমএ ছাত্রীদের একাংশের তুমুল ঝগড়া বাঁধে। অধ্যাপকদের হস্তক্ষেপে বিষয়টি তখনকার মত মিটলেও কলেজের গেটে তালা ঝুলিয়ে ওই ছাত্রীদের আটকে রাখা হয়। সুব্রত চট্টোপাধ্যায় তখন ওই ছাত্রীদের নিয়ে কলেজ থেকে বার হওয়ার চেষ্টা করেন। এই সময় তাঁর ওপর চড়াও হয় ২ ছাত্র।
সুব্রতবাবুকে কিল চড়ও মারা হয়। নিগ্রহ ও অপমানে সুব্রতবাবু মাথায় হাত দিয়ে কলেজের গেটের কাছেই বসে পড়েন। এই ঘটনা সামনে আসতেই শুরু হয় তোলপাড়। শিক্ষক নিগ্রহের ঘটনায় ছিছি পড়ে যায় সর্বত্র। এরপরই এদিন সুব্রতবাবুকে নিজে ফোন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সুব্রতবাবুই সেকথা সাংবাদিকদের জানান। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে আশ্বাস দিয়েছেন। ফলে তিনি অনেকটা ভরসা পাচ্ছেন এখন। যে আতঙ্ক তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে গ্রাস করেছিল তা যে মুখ্যমন্ত্রীর ফোনের পর কিছুটা কেটেছে তা সুব্রতবাবুর মুখের কথাতেই পরিস্কার।
এদিন মুখ্যমন্ত্রীর ফোন ছাড়াও উত্তরপাড়ার বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল ও তৃণমূলের জেলা সভাপতি হাত জোড় করে ক্ষমা চান সুব্রতবাবুর কাছে। এদিকে যে ছাত্ররা মারধর করেছে বলে অভিযোগ তাদের মাথা হলেন এক স্থানীয় কাউন্সিলর বলেও সাফ জানিয়েছেন সুব্রতবাবু। তবে তিনি এটাও বলেন যে ওনার নাম নিতে ভয় পাচ্ছেন। সেক্ষেত্রে তাঁকে চাকরিও খোয়াতে হতে পারে।
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস পেয়েছেন সুব্রতবাবু। মুখ্যমন্ত্রী তো ফোন করেছেন। সেইসঙ্গে স্থানীয় বিধায়ক ও তৃণমূল জেলা সভাপতির কাছ থেকে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হওয়ার আশ্বাস পেয়েছেন সুব্রতবাবু। এদিকে অধ্যাপক নিগ্রহের ঘটনার প্রতিবাদ করে বৃহস্পতিবার ক্লাস বয়কট করেন ওই কলেজের অধ্যাপকেরা। তাঁরা চিঠি দিয়ে ক্লাস বয়কটের কথা কলেজের প্রিন্সিপালকে জানিয়েও দেন।