এনআরসি বা জাতীয় নাগরিকপঞ্জী যখন অসমে পুরোদমে চালু হয় তখনই তিনি তার প্রতিবাদে সোচ্চার হন। জানিয়ে দেন বাংলায় এনআরসি তিনি হতে দেবেন না। অসমেও এনআরসি-র বিরোধিতা করে একটি প্রতিনিধি দল পাঠান। যে প্রতিনিধিদলকে বিমানবন্দরের মধ্যেই আটকে দেওয়া হয়েছিল। অসমে নাগরিকপঞ্জীর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর থেকেই বিজেপির তরফে দাবি করা হচ্ছিল এবার পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি হবে। যা এখনও বিজেপি নেতারা বারবার বলছেন। কিন্তু তার বিরুদ্ধে সরব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনিও জানিয়ে দিয়েছেন কোনওভাবেই এ রাজ্যে তিনি এনআরসি হতে দেবেন না। এ বিষয়ে তিনি পাশে পেয়েছেন বাম ও কংগ্রেসকে। ফলে রাজ্যে এনআরসি বিরোধিতায় আরও শক্তি অর্জন করেছেন মমতা।
রাজ্যে এনআরসি হতে দেবেন না। একথা এতদিন নানাভাবে জানিয়ে এলেও এবার প্রথম পথে নেমে এনআরসির প্রতিবাদে সরব হলেন মমতা। বৃহস্পতিবার সিঁথির মোড় থেকে শ্যামবাজার পাঁচমাথার মোড় পর্যন্ত মিছিল করেন তিনি। সিঁথির মোড়ে আগেই উপস্থিত হয়েছিলেন সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, শান্তনু সেন। ছিলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, শশী পাঁজা, তাপস রায়। ছিলেন দোলা সেন, দীনেশ ত্রিবেদী, সুব্রত বক্সির মত নেতারাও। আর ছিলেন বহু তৃণমূল কর্মী সমর্থক। দুপুর আড়াইটেয় শুরুর কথা থাকলেও বৃষ্টি বিঘ্নিত দিনে মিছিল শুরু হয় তার একটু পরে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিঁথিতে পৌঁছেই মিছিলে পা মেলান।
সিঁথি থেকে বিটি রোড ধরে মমতার মিছিল যত এগিয়েছে ততই যেন জনসমুদ্র তৈরি হয়েছে। মিছিলে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় না হাঁটলেও হাঁটেন ফিরহাদ হাকিম। মিছিল দেখতে যেমন রাস্তার দুধারে অগণিত মানুষের ভিড় জমেছিল। তেমনই মাঝেমধ্যেই মানুষ কাছে চলে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রীর। প্রণাম করেছেন। পরে আবার তাঁদের সরিয়ে দিয়েছেন মমতার সুরক্ষাকর্মীরা। দুপাশে মাঝেমধ্যেই ছিল মঞ্চ। এদিন ক্রমশ মিছিল এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শ্যামবাজারেও তোড়জোড় ছিল তুঙ্গে। মিছিল যখন চলছে তখনই শ্যামবাজারের মঞ্চে পৌঁছে যান সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌগত রায়রা। এদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে স্বাগত জানাতে ফুলও ছোঁড়া হয় রাস্তা দুধার থেকে। সাড়ে ৩টে নাগাদ মিছিল এসে পৌঁছয় শ্যামবাজারে। শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড় তখন স্তব্ধ হয়ে গেছে। শুধু মানুষের মাথাই দেখা যাচ্ছিল সর্বত্র।