বিজেপিকে ওয়াশিং মেশিন বলে তোপ মমতার, তুলনা ট্রাম্পের সঙ্গেও
জনসভা থেকে বিজেপিকে ফের কড়া ভাষায় নিশানা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভয় দিলেন মতুয়াদের।
কলকাতা : বিজেপি হল ওয়াশিং মেশিন। তৃণমূলে থাকলে সবাই কালো। আর বিজেপিতে গেলেই সকলে ভাল। নদিয়ার রাণাঘাটের হাবিবপুরের ছাতিমতলার জনসভা থেকে এভাবেই বিজেপিকে নিশানা করলেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন তিনি আরও তোপ দেগেছেন। কার্যত নাম না করে তিনি বলেন, ওরা হল ডোনাল্ড ট্রাম্পের মত। ট্রাম্প যেমন হেরেও বলছেন তিনি জিতেছেন, ওরাও তেমন হেরেও বলবে হাম জিতা হ্যায়।
রাণাঘাটের এই সভা থেকে এদিন মুখ্যমন্ত্রী মতুয়াদের অভয় দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। এনআরসি প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, বাবা-মায়ের জন্মদিন বলতে না পারলে দেশ থেকে তাড়ানোর চক্রান্ত হচ্ছে।
আগেকার মানুষের বাবা-মায়ের মৃত্যুদিন মনে থাকতেও পারে, কিন্তু জন্মদিন মনে থাকেনা। তাদের নাকি তাড়িয়ে দেবে। এটা তিনি হতে দেবেন না বলে আশ্বাস দেওয়ার চেষ্টা করেন মুখ্যমন্ত্রী। জানান, মতুয়ারা এ দেশেরই নাগরিক।
মুখ্যমন্ত্রীর স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প নিয়ে বিজেপি প্রশ্ন তুলছে। এদিন পাল্টা আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পকে নিশানা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পে ৬০ টাকা কেন্দ্র দেবে। আর বাকি ৪০ টাকা ওই ব্যক্তিকেই দিতে হবে। কিন্তু স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে ১০০ টাকাই রাজ্যসরকার দেবে। এই ব্যাখ্যা দিয়ে সকলকে জিজ্ঞেস করেন এবার বলুন কোনটা ভাল?
অনেক জায়গায় স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে চিকিৎসা পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ সামনে এসেছে। মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকলে তাঁকে পরিষেবা দিতেই হবে।
প্রতিটি হাসপাতাল ও নার্সিং হোমকে সতর্ক করে তিনি বলেন, পরিষেবা দিতেই হবে। না দিলে সরকারের হাতে তাদের লাইসেন্স বাতিল করার ক্ষমতা আছে।
বড় বড় হাসপাতালের সঙ্গেও স্বাস্থ্যসাথী পরিষেবা নিয়ে কথা বলা হবে বলে জানান তিনি। স্বাস্থ্যসাথী নিয়ে কোনও সমস্যা হলে থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করার পরামর্শও সকলকে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
বিজেপি নেতারা ফাইভ স্টার হোটেলে থেকে সেখান থেকে খাবার এনে খান। সঙ্গে হিমালয়-এর মিনারেল ওয়াটার খান বলেও তোপ দাগেন মমতা।
একটি মিনারেল ওয়াটারের বোতল সকলের সামনে তুলে ধরে তিনি বলেন এটা প্রাণধারা। এটার দাম ৬ টাকা। এটা তিনি খান। আর বিজেপি নেতারা হিমালয় মিনারেল ওয়াটার খান। হিমালয়ের দাম কত? কটাক্ষের সুরে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী।
২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের আগে ২ কোটি মানুষের চাকরির আশ্বাস দিলেও এখন বরং ৪০ শতাংশ মানুষের চাকরি গেছে বলে এদিন দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। এভাবেই এদিন মোদী সরকারকে আক্রমণ করেন তিনি।
লকডাউনের সময় পরিযায়ী শ্রমিকদের রাজ্যসরকার ভিন রাজ্য থেকে এ রাজ্যে এনেছিল। সেই আনার খরচ কেন্দ্র দেয়নি বলেও এদিন তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।