সওয়া ১২টায় বেজে উঠল সাইরেন, মুখ্যমন্ত্রী বাজালেন শঙ্খ
ঠিক বেলা ১২টা। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্ম মুহুর্ত। সেই মুহুর্তকে স্মরণ করে বেজে উঠল সাইরেন। মুখ্যমন্ত্রী বাজালেন শাঁখ। আর শুরু হল বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা।ঠিক বেলা ১২টা। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্ম মুহুর্ত। সেই মুহুর্তকে স্মরণ করে বেজে উঠল সাইরেন। মুখ্যমন্ত্রী বাজালেন শাঁখ। আর শুরু হল বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা।
কলকাতা : তোরজোড় শুরু হয়েছিল আগে থেকেই। শ্যামবাজার পাঁচমাথার মোড়ে তৈরি হয়েছিল বিশাল স্টেজ। নেতাজি মূর্তির মাথা তিরঙ্গায় ঢাকা পড়েছিল। সেজে উঠেছিল চারধার।
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫ তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন শুরুর আয়োজনে খামতি ছিলনা। প্রতি বছর রেড রোডে নেতাজি মূর্তিতে মাল্যদান করেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার শ্যামবাজারে নেতাজি মূর্তিতে মাল্যদান করলেন তিনি। তারপর হাতে তুলে নিলেন শঙ্খ।
সকাল থেকেই শ্যামবাজারে মুখ্যমন্ত্রীর শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে ভিড় জমতে শুরু করেছিল। বন্ধ হয়ে গিয়েছিল বাস-ট্রাম। সময় যত এগোয় ততই বাড়তে থাকে মানুষের ঢল। বেলা ১২টা নাগাদ সেখানে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রথমে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে নেতাজিকে স্মরণ করেন। তারপর মঞ্চে উঠে মাল্যদানের পর সামান্য অপেক্ষা। সকলেই তখন ঘড়ি দেখছেন। ঠিক সওয়া ১২টা বাজতেই শুরু হয় সাইরেন বাজা।
হাতে থাকা শাঁখ বাজাতে শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রী। যদিও সাইরেনের আওয়াজে তা কিছুটা ঢাকা পড়ে যায়। ভিড়ের মধ্যে থেকেও বেজে ওঠে শাঁখের আওয়াজ। সাইরেন শেষ হতে শাঁখ বাজানো থামিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নেমে আসেন। তারপর সময় নষ্ট না করে শুরু হয় শোভাযাত্রা।
শ্যামবাজার থেকে বিশাল শোভাযাত্রার সামনেই ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর সঙ্গে ছিলেন শশী পাঁজা, নুসরত জাহান সহ অনেকে। আর ছিলেন অসংখ্য তৃণমূল কর্মী সমর্থক। যাঁদের পা মেলানোয় শোভাযাত্রার শেষ দেখা মুশকিল ছিল। শুধু মাথা আর মাথা।
ভূপেন বোস অ্যাভিনিউয়ের প্রশস্ত রাজপথ জুড়ে তখন শুধুই মানুষের ঢল। রাস্তার দুধারেও বহু মানুষকে দেখা যায় এই শোভাযাত্রা দেখার জন্য ভিড় জমাতে। তাঁদের অনেকের হাতে ছিল নেতাজির ছবি।
রাস্তায় ধারে ধারে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের তরফে তৈরি করা হয়েছিল মঞ্চ। সেখান থেকে ফুল উড়ে আসতে থাকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে। ওঠে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ স্লোগানও।
এদিকে শোভাযাত্রা যতই এগিয়েছে ততই ভিড় বাড়তে থেকেছে। স্থানীয় তৃণমূল কর্মী সমর্থক থেকে সাধারণ মানুষ, অনেকেই শোভাযাত্রায় পা মেলান। বয়স্করাও যাতে এই শোভাযাত্রায় অংশ নিতে পারেন সেজন্য ২টি দোতলা হুডখোলা বাসের ব্যবস্থাও করা ছিল। মাটাডোরে বেজে চলছিল নেতাজিকে স্মরণ করে দেশাত্মবোধক গান।
শোভাযাত্রার পুরো পথে ছিল জলের জন্য কিয়স্ক। ছিল নেতাজি স্মরণে ফ্লেক্স। সব মিলিয়ে শোভাযাত্রা যথার্থ অর্থেই শোভাযাত্রার চেহারা নেয় এদিন।
শোভাযাত্রা ঘিরে মানুষের উৎসাহ ছিল নজরকাড়া। রাস্তার দুধারের বাড়ির জানালা, বারান্দা, ছাদও মানুষে থিকথিক করছিল। শোভাযাত্রায় ছিল বেলুন। ছিল ব্যান্ড পার্টি। ছিল ড্রোনের মাধ্যমে কঠোর নজরদারিও। শোভাযাত্রা এদিন রানি রাসমণি রোডে এসে পৌঁছয় দুপুর দেড়টায়।
সেখানেই তৈরি হয়েছিল মঞ্চ। মঞ্চের শুরুটাই হয় সুগত বসুর নেতাজিকে স্মরণ করে উদাত্ত কণ্ঠের গান দিয়ে। মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে কদম কদম বাড়ায়ে যা গাইতে অনুরোধ করেন। যখন মঞ্চে অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেছে তখনও দেখা যায় শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া বহু মানুষ এসে পৌঁছচ্ছেন সেখানে।