১৯৭৮ সালের ৪ জানুয়ারি। সেবার ১৫ ফুট ছিল বোস্টন বন্দরের জলোচ্ছ্বাসের উচ্চতা। তারপর ২০১৮-র ২ মার্চ। ৪০ বছর পর আরও একবার ভাসল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন শহর। এই নিয়ে চলতি বছরে ২ বার বন্যার কবলে পড়তে হল বোস্টনকে। সকাল থেকেই মেঘলা আকাশ আর ঝিরঝিরে বৃষ্টি দেখে প্রমাদ গুনছিলেন শহরবাসী। আবহবিদরা আগেই অবশ্য সতর্ক করে দিয়েছিলেন। তাঁদের সেই সতর্কবাণীকে সত্যি প্রমাণ করে শুক্রবার বোস্টনে আছড়ে পড়ে শক্তিশালী উপকূলীয় ঝড়। ঘড়ির কাঁটা ১১টা ছুঁতেই শুরু হয়ে যায় তাণ্ডব। ঝোড়ো হাওয়ার দাপটে উত্তাল জলরাশি হুহু করে ঢুকে পড়ে বোস্টনের পেটের ভিতর। চোখের পলকে ব্যস্তসমস্ত রাস্তা জলের তলায় চলে যায়। বিদ্যুৎ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে ম্যাসাচুসেটসের সিংহভাগ এলাকায়। অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয় স্কুল, কলেজ, সরকারি ও বেসরকারি দফতর। উদ্ধারকার্যের জন্য রাস্তায় তৈরি কৃত্রিম নদীতে নামানো হয় নৌকা। বন্যাকবলিত এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয় আটকে পড়া বাসিন্দা ও তাদের পোষ্যদের। তবে এখনও অবধি প্রাণহানি ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কোনও খবর পাওয়া যায়নি।
৪০ বছর আগের রেকর্ড বলছে, সেবার শহরে ঢুকে পড়া জলোচ্ছ্বাসের উচ্চতা ছিল ১৫ ফুট। এবার সেই উচ্চতা ১৪.৬৭ ফুট। যার জেরে এখন গৃহবন্দি দশা বোস্টনবাসীর। ঝোড়ো হাওয়ার গতিবেগ কমলেও জলস্তর নামতে সময় লাগবে। তাই আপাতত শহরবাসীকে কয়েকদিন ঘরের ভিতরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে প্রশাসন। আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর, বোস্টনের দিকে ধেয়ে আসা ঝোড়ো হাওয়া ধীরে ধীরে তার মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছে। দিক বদলে এখন সে শক্তি সঞ্চয় করে এগিয়ে যাচ্ছে দক্ষিণ ইংল্যান্ড উপকূল ও নিউ ইয়র্কের দিকে। তবে ঝড়ের প্রভাবে আগামী কয়েকদিনে ফের বৃষ্টির কবলে পড়তে পারে ম্যাসাচুসেটস। এমনকি তুষারপাতের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিতে পারছেন না বোস্টনের আবহ বিজ্ঞানীরা।