অগুনতি পুরনো পুতুল ঝুলছে সর্বত্র, পুতুল দ্বীপে রাতে শোনা যায় কান্নার আওয়াজ
এ দ্বীপে এখনও রাতে শোনা যায় কোনও মেয়ের কান্নার আওয়াজ। তেমনই দাবি এই দ্বীপের কেয়ারটেকারের। চারিদিকে ঝোলে নানা রকমের পুরনো পুতুল।
এ দ্বীপে পা দিলেই নজরে পড়ে হাজার হাজার পুতুল। ছোট্ট পুতুল থেকে শুরু করে দানব চেহারার পুতুল। সবই নজরে পড়বে।
কোথায় নেই পুতুল? গাছের গুঁড়ি থেকে কাঠের পাটাতন, কুঁড়েঘর থেকে মাটিতে পড়ে থাকা পুতুল। গুনে শেষ করা যায়না কত পুতুল রয়েছে চারিদিকে। সবই বিকৃত অবস্থায় রয়েছে।
কোনওটার হাত নেই, কোনওটার মাথা নেই, নোংরা এতই যে হাতও দিতে ২ বার ভাববেন মানুষ। পুতুল দেখে এখানে মন ভাল হয়না। বরং একটা অজানা আতঙ্ক পেয়ে বসে।
গা ছমছম করে তাদের দিকে দেখলে। অনেক পর্যটকের তো মনে হয় পুতুলগুলো তাঁদের কথা শুনছে। তাঁদের দিকে তাকাচ্ছে। এ দ্বীপে রাত নামলে তা আরও ভূতুড়ে রূপ নেয়। সেখানে মানুষের পক্ষে থাকা সম্ভব হয়না।
কথিত আছে ১৯৫০ সালে এখানে তখন এমন অবস্থা ছিলনা। মানুষজনও থাকতেন। দ্বীপের একটি মিষ্টি জলের হ্রদে স্নান করতে নেমে আচমকা তলিয়ে যেতে থাকে একটি ছোট মেয়ে।
বালিকাটিকে বাঁচাতে লাফ মারেন ডন জুলিয়ান নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা। কিন্তু মেয়েটিকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। তারপর থেকেই জুলিয়ান বিভিন্ন সময়ে শুনতে পেতেন কোনও এক বালিকার ঢুকরে কান্নার আওয়াজ। চারিদিকে ঘুরেও কাউকে দেখতে পেতেন না।
তাঁর মনে হত ওই ডুবে যাওয়া মেয়েটির আত্মা আশপাশে ঘুরছে। তিনি তাই যখনই শহরে যেতেন তখনই আস্তাকুঁড় থেকেও পারলে ফেলে দেওয়া পুতুল কুড়িয়ে আনতেন। কেউ নতুন দিলে সেটাও এখানে এনে রাখতেন।
ভাবতেন অনেক পুতুল আনলে যদি শান্ত হয় বালিকার আত্মা। কিন্তু তেমনটা হয়নি। এদিকে এভাবে পুতুল জমা হতে থাকে। যা এতদিন ধরে জমা হয়ে এখন দ্বীপ জুড়ে ভরে গেছে।
মেক্সিকোর এই পুতুলদের দ্বীপকে পৃথিবীর অন্যতম ভয়ের জায়গা বলে চিহ্নিত করা হয়। এখানে যে কেয়ারটেকার আছেন, তিনি রাতেও থাকেন। তাঁর মতে, তিনি এবং তাঁর এক সঙ্গী রাতে এখনও কোনও মেয়ের কান্নার আওয়াজ পান।
এখানে পর্যটকরা আসেন বটে। তবে রাতে থাকেন না। এখানকার এই নোংরা নষ্ট হওয়া বিকৃত পুতুলের ভিড় দেখে অনেক পর্যটকই শিহরিত হন।