ফের প্রকৃতির রোষের মুখে মেক্সিকো। সেপ্টেম্বর ৮, ২০১৭। রিখটার স্কেলে ভূকম্পের মাত্রা ৮.২। মৃতের সংখ্যা ৩০-র বেশি। মাঝখানে ২ সপ্তাহের ব্যবধান। সেপ্টেম্বর ২০, রিখটার স্কেলে ভূকম্পনের মাত্রা এবার ৮.১। মৃতের সংখ্যা ২৫০-র বেশি। মাঝখানে ৪ মাসের বিরতি। এই ৪ মাসে ভূমিকম্পের দুঃস্বপ্নের স্মৃতি ভুলে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছিলেন মেক্সিকানরা। ঠিক সেইসময়েই ফের জোরাল প্রত্যাঘাত। তীব্র ভূমিকম্পে আবার কেঁপে উঠল মেক্সিকোর একাংশ। রিখটার স্কেলে সেই কম্পনের মাত্রা ৭.২।
গত শুক্রবার স্থানীয় সময় তখন সাড়ে ৬টা। আচমকাই পায়ের তলার জমি কেঁপে ওঠা টের পান মেক্সিকোর বাসিন্দারা। ভেসে আসা সাইরেনের তীব্র শব্দ জানান দেয়, মেক্সিকো ফের ভূমিকম্পের কবলে পড়েছে। ঘর, অফিস, দোকান ছেড়ে আতঙ্কিত মানুষ পিলপিল করে বেরিয়ে আসতে থাকেন রাস্তায়। এবারের ভূকম্পনের তীব্রতা সবথেকে বেশি অনুভূত হয়েছে মেক্সিকোর দক্ষিণভাগের ওয়াক্সকা প্রদেশে। কারণ, ভূমিকম্পের উৎসস্থল ছিল ওয়াক্সকা থেকে ৯০ মাইল দূরের প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলীয় অঞ্চলে। মাটির ২৪.৬ কিলোমিটার গভীরে ছিল কম্পনের কেন্দ্রস্থল।
ভূমিকম্পের পরেও অবশ্য আতঙ্কের ছায়া কাটেনি মেক্সিকোর বাসিন্দাদের। গত শুক্রবার থেকে এখন পর্যন্ত ২২৫টি আফটার শকে কেঁপে উঠেছে উত্তর আমেরিকার এই রাষ্ট্র। ভূমিকম্পের পর কি তবে সুনামিও আসবে? সেই ভয়ে ছুটোছুটি করতে থাকেন লোকজন। তবে সুনামি নয়, ভূমিকম্পের উপর দিয়েই এবারের মত ফাঁড়া কেটে গেছে। সে ব্যাপারে দেশবাসীকে আশ্বস্ত করেছে মেক্সিকো প্রশাসন।
এদিকে সরাসরি ভূকম্পনের জেরে হতাহতের ছবি এখনও পরিস্কার না হলেও উদ্ধারকার্যে গিয়ে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ২ জন সেনা। তাঁরা ভূকম্পন বিধ্বস্ত এলাকায় সাহায্যের জন্য হেলিকপ্টারে করে গিয়েছিলেন। হেলিকপ্টারটি মাটিতে অবতরণের সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন হেলিকপ্টারে থাকা আরও ২০ জন। যাঁদের মধ্যে আছেন ওয়াক্সকা প্রদেশের গভর্নর এবং অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী। ভূমিকম্পের পর ওয়াক্সকা প্রদেশের বিস্তীর্ণ এলাকা ধুলো ও ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছিল। সম্ভবত সেই কারণেই হেলিকপ্টারটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে বলে অনুমান স্থানীয় প্রশাসনের। ভূকম্পনের জেরে ওয়াক্সকার বেশ কিছু ঘরবাড়ি, চার্চ, সরকারি দফতর, রাস্তাঘাটে ফাটল দেখা দিয়েছে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় এখন দিন কাটছে সেখানকার লক্ষাধিক বাসিন্দার। দ্রুততার সাথে পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক করে তুলতে উঠে পড়ে লেগেছে স্থানীয় প্রশাসন।