ভার্চুয়াল বৈঠকে দফারফা হচ্ছে পরিবেশের, জানালেন গবেষকরা
ভার্চুয়াল বৈঠকে কার্যত দফারফা হচ্ছে পরিবেশের। এমন এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এনে সতর্ক করলেন গবেষকরা। ভার্চুয়াল বৈঠকে ব্যবহৃত ক্যামেরাকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন তাঁরা।
নিউ ইয়র্ক : আগেও ছিল ভার্চুয়াল মিটিং। কিন্তু সাধারণের পরিচিত গণ্ডির বাইরে ছিল। নেহাতই কর্পোরেট দুনিয়ায় ঘোরাফেরা করত শব্দটি। কিন্তু লকডাউনে নিছক বন্ধু বা পরিবারের আড্ডা থেকে স্কুলের ক্লাস সবই হচ্ছে ভার্চুয়ালে। আবার ছোটখাটো সংস্থাও তাদের কর্মীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকের পথে হাঁটতে বাধ্য হয়েছে।
ভার্চুয়াল মিটিংয়ে মোবাইল, ল্যাপটপ বা কম্পিউটার মনিটরে ক্যামেরা অন রাখাও যায়। আবার তা বন্ধও রেখে মিটিং করা সম্ভব। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ক্যামেরা অন রেখেই হয়েছে মিটিং বা আড্ডা। আর সেখানেই ঘটেছে বিপত্তি।
ভার্চুয়াল মিটিং-এ ক্যামেরা বন্ধ করে রাখলে ক্যামেরা চালু রাখার তুলনায় অনেক কম পরিমাণে গ্রিন হাউস গ্যাস মূলত কার্বন ডাই অক্সাইডের নিঃসরণ হতে পারে বলে দাবি করা হয়েছে ‘রিসোর্সেস, কনজারভেশন অ্যান্ড রিসাইক্লিং’ – নামে জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায়।
গবেষণায় দেখানো হয়েছে ওয়েব কলের সময় যদি কোনও ব্যক্তি তাঁর কামেরা বন্ধ রাখেন তাহলে, তাঁর কার্বন ফুটপ্রিন্ট ৯৬% শতাংশ কম হয়।
কার্বন ফুটপ্রিন্ট বলতে বোঝায়, কোনও মানুষ বা কোনও প্রতিষ্ঠান তাদের দৈনন্দিন কার্যকলাপের মাধ্যমে কতটা গ্রিন হাউস গ্যাস যা মূলত কার্বন ডাই অক্সাইড বাতাসে নিঃসরণ করছেন।
বর্তমানের ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’- এর যুগে ভার্চুয়াল মিটিং এখন যেকোনো ক্ষেত্রেই অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। সেই পরিস্থিতিতে মিটিং-এর সময় ক্যামেরা চালু রাখলে যে পরিমাণ কার্বন ফুট প্রিন্ট তৈরি হয়, তা পরিবেশের জন্য যথেষ্ট ক্ষতিকারক।
কোভিড-১৯-এর জন্য লকডাউন হওয়ার আগে থেকেই ইন্টারনেটের কার্বন ফুটপ্রিন্ট বৃদ্ধি পাচ্ছিল। যা লকডাউনে আরও বেড়েছে।
গবেষকরা ইউটিউব, জুম, ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, টুইটার সহ আরও ১২টি অন্য প্ল্যাটফর্ম, অনলাইন গেমিং প্ল্যাটফর্ম ও বিভিন্ন ওয়েব সার্ফিং-এ ব্যবহৃত প্রতিটি গিগাবাইট ডেটার সাথে যুক্ত কার্বন, ওয়াটার ও ল্যান্ড ফুট প্রিন্টগুলির পরিমাপ করেছেন।
গবেষকরা অনুসন্ধান করেছেন এই ফুটপ্রিন্টগুলি কতটা ক্ষতিকারক হচ্ছে এই বিপুল ইন্টারনেট ব্যবহারের যুগে। গবেষকদের দলটি ভারত, ব্রাজিল, চিন, ফ্রান্স, জার্মানি, ইরান, জাপান, মেক্সিকো, রাশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রিটেন ও আমেরিকা থেকে তথ্য সংগ্রহ করে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন।
গবেষকরা জানিয়েছেন নেটফ্লিক্স বা জুলু-র মত অনলাইন অ্যাপ্লিকেশনগুলিকে এইচডি-তে না দেখে যদি এসডি-তে দেখা যায় তাহলে ৮৬ শতাংশ অবধি কার্বন ফুটপ্রিন্ট কম হয়। এই গবেষণায় ওয়াটার ও ল্যান্ড ফুট প্রিন্টগুলিকে সমান গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। যা আগে এমনভাবে করা হয়নি। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা