এভারেস্টে চড়ার ধাপগুলি কি, চরম দুর্গম অংশটি পার করতে হয় কোন সময়
এভারেস্টে চড়ার কয়েকটি ধাপ রয়েছে। জানেন কোন ধাপে কি পড়বে? এমন এক জায়গা রয়েছে যে কোনও সময় বিপদ ঘটতে পারে। তা পার করতে হয় ঠিক কোন সময়?
এভারেস্টে চড়ার স্বপ্ন যে কোনও পর্বতারোহী দেখেন। প্রতিবছর বিভিন্ন দেশ থেকে পর্বতারোহীরা বিশ্বের উচ্চতম শৃঙ্গে চড়তে হাজির হন নেপালে। নেপালের দিক দিয়ে এভারেস্টে চড়ার প্রবণতাই মানুষের বেশি।
এখানে এক এক করে পার করতে হয় স্তর। তবে পৌঁছনো যায় এভারেস্টের মাথায়। যাকে পর্বতারোহীরা সামিট বলেন। কিন্তু সেই পর্যন্ত পৌঁছতে কোন কোন স্তর পার করতে হয়? কত সময় লাগে? কেমন বিপদ দাঁড়িয়ে থাকে রাস্তায়? কোন সময় কোন অংশ পার করতে হয়? সেসব খুঁটিনাটি বেশ চমকপ্রদ।
এভারেস্টের বেস ক্যাম্প হল ৫ হাজার ৩৬৪ মিটার উচ্চতায়। এখান থেকেই মোটামুটি এভারেস্টে চড়া শুরু বলে ধরে নেওয়া হয়। বেস ক্যাম্প থেকে ক্যাম্প ১ যা ৫ হাজার ৯৪৩ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত সেখানে পৌঁছতেই কিন্তু সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয় পর্বতারোহীদের। তাই এভারেস্টের মাথার কাছে নয়, নিছক বেস ক্যাম্প থেকে যাত্রা করার পরই বিপদ দাঁড়িয়ে থাকে।
বেস ক্যাম্প থেকে ক্যাম্প ১ যেতে মাঝে পড়ে খুম্বু আইস ফল। এই জায়গা অতি দুর্গম। একটু এদিক ওদিক হলে বরফের নিচে তলিয়ে যাবেন যে কেউ। এই অতি দুর্গম অংশটি সব পর্বতারোহী রাতে পার করেন। ভোরের আগেই এটা পার করতে হয়। সূর্য উঠলে এর বরফ গলতে থাকে। আর তা দ্রুত বড় ফাটল তৈরি করে। যা দিয়ে গলে গেলে আর রক্ষা নেই!
ক্যাম্প ১-এ পৌঁছে যাওয়ার পর সেখান থেকে ক্যাম্প ২ অর্থাৎ ৬ হাজার ৪০০ মিটার উচ্চতায় পৌঁছতে লাগে ৪ ঘণ্টা। এই অংশটা পার করা যেমন সহজ তেমন মজাদার। ক্যাম্প ২ থেকে ক্যাম্প ৩ অর্থাৎ ৭ হাজার ১৬২ মিটার উচ্চতায় পৌঁছতে লাগে ৭ ঘণ্টা। এটাও অতটা দুর্গম নয়। আবার ক্যাম্প ৩ থেকে ক্যাম্প ৪ অর্থাৎ ৮ হাজার মিটার উচ্চতায় পৌঁছতে লাগে ৭ ঘণ্টার মত।
এই ক্যাম্প ৪-এ পৌঁছে যাওয়া মানে এবার স্বপ্নকে ছুঁয়ে দেখার খুব কাছে পৌঁছে যাওয়া। ৮ হাজার ৮৪৮ মিটার উচ্চতায় সামিটে পৌঁছতে ক্যাম্প ৪ থেকে লাগে প্রায় ১০ ঘণ্টা। এটা যেমন কঠিন, তেমন আনন্দের যাত্রা। কারণ পর্বতারোহীরা এই রুটে শুধু এভারেস্টের মাথার দিকেই এগিয়ে চলেন না, এগিয়ে চলেন পৃথিবীর সর্বোচ্চ বিন্দু থেকে বিশ্বটাকে নিচে তাকিয়ে দেখার বিরল মুহুর্তের সাক্ষী হতে। এভারেস্ট জয়ের বিরল সম্মান অর্জন করতে।