ঠিক ছিল সবই। অপেক্ষা ছিল আনুষ্ঠানিক ঘোষণার। সেটা এদিন বিকেলে উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডুর হাতে রাজ্যসভার সদস্যপদ থেকে ইস্তফার চিঠি তুলে দিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়ে দিলেন মুকুল রায়। দিল্লিতে করা সাংবাদিক সম্মেলনে মুকুল জানান, তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাথমিক সদস্যপদ সহ সব পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছেন। এককথায় দল ছাড়লেন মুকুল রায়। কারণও জানিয়েছেন তিনি। জন্মলগ্নের পর থেকে কখনও তৃণমূল কংগ্রেস বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। সরকারে সামিল হয়েছে। তখন বিজেপি সাম্প্রদায়িক ছিল না। আবার কখনও কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকারে থেকেছে। তখন কংগ্রেসের বিরুদ্ধে কোনও লড়াই ছিল না। মুকুল রায়ের দাবি, এটা তিনি মেনে নিতে পারছেন না। তাই দল ছাড়লেন। যা মাস ছ’য়েক আগেই ঠিক করেছিলেন। তাঁর মতে, তৃণমূলে একজনই সব। কিন্তু তিনি দলে চাকর হয়ে থাকতে পারবেন না। চুপ করে অন্যদের মত সব মেনেও নিতে পারবেন না।
তবে এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সারদা, নারদ থেকে ক্লিনচিট দিয়েছেন তিনি। তাঁর দাবি, সারদা বা নারদের কথা মুখ্যমন্ত্রী জানতেন না। এটা ব্যক্তি নেতার বিষয়। এদিন সাংবাদিক বৈঠকের শুরুতে দলের জন্মলগ্ন থেকে কীভাবে তিনি সঙ্গে ছিলেন তার বিস্তারিত তথ্য দলিল সহ তুলে ধরেন মুকুল রায়। জানান অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয়ে দল ছাড়ছেন। এদিকে পুজোর আগে মুকুল রায় দল ছাড়ার ইঙ্গিত দেওয়ার পর তাঁকে দল থেকে ৬ বছরের জন্য সাসপেন্ডের কথা ঘোষণা করেন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এরপর থেকে মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে একের পর এক বাক্যবাণ হেনেছেন তিনি। এদিন মুকুলের জবাব এসবের কোনও উত্তর তিনি দেবেন না। পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে তাচ্ছিল্যের সঙ্গে ‘বাচ্চা ছেলে’ বলে সম্বোধন করেন তিনি।
তবে এদিন আগাগোড়া বিজেপির বিরুদ্ধে মুখ খুলতে দেখা যায়নি তাঁকে। সুকৌশলে এড়িয়ে গেছেন বিজেপিতে যোগদানের সম্ভাবনার কথাও। জানিয়েছেন সকলের সঙ্গেই কথা হচ্ছে। এখনই কোনও দলে যোগ দিচ্ছেন না। কিছুদিন ছুটি কাটাতে চান। দীপাবলির পর তিনি কোনও দলে যোগ দিলে তখন তা জানিয়ে দেবেন বলেও পরিস্কার করে দেন মুকুল রায়।