মুকুল রায় আগেই ঘোষণা করেছিলেন বিজেপির ডাকে রানি রাসমণি রোডে ১০ নভেম্বরের জনসভা থেকেই তাঁর প্রাক্তন দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খুলবেন। তাঁর মুখ নিঃসৃত গাথা শোনার জন্য একরাশ প্রত্যাশা নিয়ে শুধুমাত্র বিজেপির দলীয় কর্মীরাই অপেক্ষা করছিলেন না, অপেক্ষায় ছিলেন রাজ্যের সাধারণ মানুষও। অপেক্ষায় ছিল খোদ শাসক দল তৃণমূলও। জানতে উৎসাহী ছিল বিরোধী দলগুলিও। এদিন মঞ্চে বক্তব্য রাখতে উঠে মুকুল রায় দাবি করেন, পাল্টে গেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জ্যোতি বসুর রোগ লেগেছে মুখ্যমন্ত্রীর, কটাক্ষ মুকুলবাবুর। মুখ্যমন্ত্রী আর তাঁর ভাইপো সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে তোপ দেগে মুকুলবাবু বলেন, তৃণমূল এখন প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে। তাই সেই দলে তাঁর দম বন্ধ হয়ে আসছিল। সেটাই তৃণমূল ছাড়ার কারণ বলে এদিন ব্যাখ্যা করেন মুকুল রায়। তাঁর দাবি, তৃণমূল জমানায় সংখ্যালঘুদের উন্নতি হচ্ছে না। রাজ্যে বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কাঠগড়ায় দাঁড় করান মুকুলবাবু। তাঁর দাবি বাংলায় কোনও ঠিকঠাক শিল্প আসেনি।
এদিন মুকুল রায় কটাক্ষের সুরেই বলেন, বাংলায় যখন ডেঙ্গিতে মানুষ মারা যাচ্ছেন, তখন মুখ্যমন্ত্রী উৎসব করতে ব্যস্ত। বিদেশে যেতে ব্যস্ত। তাঁর আরও দাবি, সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল থাকলেও সেখানে চিকিৎসক নেই। বদলা নয়, বদল চাই বলে ক্ষমতায় এলেও তৃণমূল সরকার এখন পুলিশ দিয়ে ভয় দেখিয়ে বিরোধীদের দমন করার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে দাবি করেন মুকুলবাবু।
এদিন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও ছিলেন মুকুল রায়ের নিশানায়। মুকুলবাবু দাবি করেন, বিশ্ববাংলার লোগো আসলে অভিষেকের একটি সংস্থার লোগো। সেটাই বিশ্ববাংলার লোগো হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়া তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’-র মালিক অভিষেক বলেই দাবি করেছেন মুকুলবাবু। আগামী দিনে তৃণমূলের সম্বন্ধে আরও বোমা তিনি ফাটাবেন বলেও এদিন ইঙ্গিত দিয়েছেন মুকুল রায়।
বিজেপিতে যোগ দিয়ে কলকাতায় পা রাখার পর মুকুল রায় জানিয়েছিলেন রাজ্যে তাঁর ক্যাপ্টেন দিলীপ ঘোষ। এদিন সভামঞ্চ থেকে দিলীপ ঘোষও প্রতিদান দিয়েছেন মুকুলের রাজনৈতিক সৌজন্যতার। দিলীপবাবু জানিয়ে দেন, মুকুল রায় রাজ্যে তাঁদের দলের কোচ। কোচের পরামর্শেই আগামী দিনে রাজ্যে এগোবে বিজেপি।
(ছবি – সৌজন্যে – ট্যুইটার)