জাগো বাংলা, বিশ্ববাংলা ইস্যুতে শনিবার আরও একধাপ এগিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামও জড়িয়ে দিলেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়। তাঁর দাবি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নাকি হলফনামা দিয়ে জানিয়েছেন তিনি নিজে কিছুই করেননি। ২০১৩ সালে জাগো বাংলা, বিশ্ববাংলার ট্রেড মার্কের জন্য যে আবেদন তিনি করেছিলেন তা মুখ্যমন্ত্রীর অনুমতিক্রমেই করেছিলেন। যেখানে ঠিকানা দেওয়া ছিল ৩০বি, হরিশ চ্যাটার্জী স্ট্রিট।
জাগো বাংলা ও বিশ্ববাংলা আসলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো তথা ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। গত ১০ নভেম্বর রানি রাসমনি রোডের বিজেপির জনসভায় মঞ্চে প্রথম আত্মপ্রকাশে সদ্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া মুকুল রায় এমনই দাবি করেন। এরপর তা নিয়ে অনেক জল গড়ায়। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে জানানো হয় ৭ দিনের মধ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা না চাইলে মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করা হবে। নবান্নে স্বরাষ্ট্রসচিব স্বয়ং জানান যা বলা হয়েছে তা সর্বৈব মিথ্যা। এমনকি গত মঙ্গলবার আলিপুরদুয়ার আদালত এমনও নির্দেশ দেয় যে জাগো বাংলা, বিশ্ববাংলা নিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জড়িয়ে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করতে পারবেন না মুকুল রায়। তার ঠিক ৩ দিন পর শনিবার মুকুল রায় সেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়েই মুখ খুললেন। এদিন মুকুলবাবু যে কটি দাবি করেছেন তার স্বপক্ষে প্রামাণ্য নথি সকলের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। বারবার বলেছেন, এটা তিনি বলছেন না, কাগজ বলছে। জাগো বাংলা, বিশ্ববাংলার পর এদিন তাঁর দাবি, মা-মাটি-মানুষের ট্রেড মার্কও নাকি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এমনকি তৃণমূলের প্রতীকের ওপরও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মালিকানা কায়েমের জন্য চেষ্টা চলছে বলে এদিন রাজ্য বিজেপির সদর দফতরে বসে দাবি করেন মুকুলবাবু।
মুকুল রায় বিজেপিতে নাম লেখানোর আগে থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে তৃণমূলের তরফে যা বলার তা তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ই বলে আসছিলেন। মুকুলবাবুকে বাচ্চা ছেলে, কাঁচরাপাড়া বয় বা চাটনিবাবু বলেও কটাক্ষ করেছিলেন তিনি। এদিন পাল্টা পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সরাসরি আক্রমণ করে মুকুলবাবুর দাবি, নাকতলা উদয়ন সংঘের পুজোর সভাপতি মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কর্পোরেট পার্টনার ভিবজিওয়রের মত সংস্থা। যে সংস্থাকে সেবি চিটফান্ড বলে ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছে। এমনকি নাকতলা উদয়ন সংঘ তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার হুমকি দিলেও তা তারা এখনও করে উঠতে পারেনি বলে কটাক্ষ করেন মুকুল রায়।
মুকুলবাবুর আরও দাবি, তিনি সহ বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ, মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়, রাজ্যের দায়িত্বে থাকা কৈলাস বিজয়বর্গীয় সহ বিজেপি নেতাদের ফোনে আড়ি পাতছে রাজ্যের তৃণমূল সরকার। এ নিয়ে তিনি দিল্লি হাইকোর্টে একটি মামলাও করেন। সেখানে নাকি রাজ্য সরকারের তরফে ৯ জন তাবড় আইনজীবীকে দাঁড় করানো হয়। কিন্তু দিল্লি হাইকোর্টের একটি সহজ কথার উত্তর দিতে পারেননি তাঁরা। আদালত যখন তাঁদের বলে, রাজ্যের আইনজীবী হিসাবে তাঁরা লিখে দিন যে কারও ফোনে আড়িপাতা হয়নি। তখন নাকি আইনজীবীরা তা লিখে দেওয়ার সাহস দেখাতে পারেননি। এমনকি এদিন সাংবাদিকদের সতর্ক করে মুকুলবাবু বলেন, তাঁদের ফোনেও আড়ি পাতছে রাজ্য সরকার।