প্রবল জল সঙ্কট বললেও বোধহয় কম বলা হয়। মুম্বই শহরের বাসিন্দাদের সারা বছরের জলের জন্য নির্ভর করতে হয় কয়েকটি জলাশয়ের ওপর। সেসব জলাশয় মিলিয়ে এখন মুম্বই শহরের জন্য জল বেঁচে আছে ৪.৯৫ শতাংশ। প্রায় তলানি ছুঁয়েছে লেকগুলি। যারমধ্যে রয়েছে মোদক সাগর, তুলসী লেক, তানসা লেক বা বিহার লেক। পাওয়াইয়ের লেকের জল ব্যবহার হয় ঠিকই। তবে পাণিয় জল হিসাবে নয়। পাওয়াই লেক থেকে জল পাঠানো হয় বিভিন্ন কারখানায়। শহরে জলের ভাণ্ডার প্রায় শেষ। অথচ এখনও বৃষ্টির দেখা নেই। ফলে মাথায় হাত পরেছে মুম্বইয়ের বৃহন্মুম্বই পুরসভার। কীভাবে শহরবাসীকে জল দেবে তা নিয়েই এখন মাথায় হাত পড়েছে তাদের।
সারা বছর শহরে জল সরবরাহ ঠিকঠাক রাখতে মুম্বইয়ের জল লাগে ১৪ লক্ষ ৪৭ হাজার ৩৬৩ মিলিয়ন লিটার। গত বছর এই সময় মুম্বইয়ের জলের ভাণ্ডারে পড়ে ছিল ২ লক্ষ ৭০ হাজার ৬৬৮ মিলিয়ন লিটার জল। সেখানে এবছর তা ঠেকেছে ৭১ হাজার ৫৭৪ মিলিয়ন লিটারে। প্রত্যেক জলাধারে দেখা যাচ্ছে তলার পাথর ছুঁয়েছে জলস্তর। বৃষ্টি না হলে সেই জলস্তর ফের ভরে ওঠার কোনও অন্য পথ নেই।
এমন অবস্থায় মুম্বইবাসীকে বিশেষভাবে সতর্ক করেছে বৃহন্মুম্বই পুরসভা। জল ব্যবহারের সময় যথেষ্ট সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে তারা। যদিও জলের পরিস্থিতি যে এবার শোচনীয় হতে পারে তা আন্দাজ করে আগে থেকেই শহর জুড়ে জল সরবরাহে কাটতি শুরু করেছিল পুরসভা। মুম্বইবাসীর ভাষায় এই ওয়াটার কাট চলছে বেশ কিছুদিন ধরেই। এবার সেই ওয়াটার কাট আরও বাড়বে বলেই মনে করছেন সকলে। যা মুম্বইবাসীর চিন্তার ভাঁজ পুরু করেছে।
এদিকে মুম্বইতে ২৫ জুন বর্ষা প্রবেশ করার কথা ছিল। কিন্তু সেই বৃষ্টির এখনও দেখা নেই। ফলে সোশ্যাল সাইট সহ বিভিন্ন মাধ্যম দিয়ে বিষয়টি সম্পর্কে শহরবাসীকে সতর্ক করে জল খুব হিসেব করে ব্যবহার করার পরামর্শ দিচ্ছে বৃহন্মুম্বই পুরসভা। অবস্থা সামাল দিতে তাদের বিশেষ জল ভাণ্ডার থেকে জুলাইয়ের শেষ পর্যন্ত শহরে জল সরবরাহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরসভা। তবে তা কখনই পর্যাপ্ত হবে না। ফলে তাঁদের কপালে এখন মাপা জল জুটতে চলেছে বলেই মনে করছেন মুম্বইবাসী। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা