এখন যা পরিস্থিতি তাতে মুম্বইবাসী কার্যত গৃহবন্দি। যে যেমন পারছেন ঘরে চাল, ডাল, আলু, নুন, ডিম মজুত করে রাখছেন। কারণ আর ১-২ দিন এমন চললে দোকান খুলবে না। বাজার বসবে না। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের আকাল শুরু হবে। বাড়ি থেকেও বার হওয়া যাবে না। চতুর্থ দিনে পা দেওয়া নাগাড়ে বৃষ্টির ভয়ংকর রূপ তেমনই ইঙ্গিত বহন করছে। মঙ্গলবারও বাণিজ্য নগরী জুড়ে একটানা বৃষ্টি হয়েই চলেছে। চারদিক সাদা করা অঝোর ধারাপাতে জল যন্ত্রণা আরও ভয়ংকর চেহারা নিয়েছে। গত ৩ দিন ধরেই ভাসছে দাদর, কুরলা, আন্ধেরি, যোগেশ্বরী, পারেল সহ মুম্বইয়ের বিস্তীর্ণ এলাকা। অনেক বাড়িতেই জল ঢুকে গিয়েছে। একতলা জলের তলায়। রাস্তায় নৌকা নেমেছে। যান চলাচল স্তব্ধ।
গত সোমবার পর্যন্ত ধীরে হলেও ট্রেন চলাচল চালু ছিল। মঙ্গলে অবস্থার আরও অবনতি হওয়ায় ট্রেন চলাচল অনেক লাইনে বন্ধ হতে শুরু করেছে। লাইনের ওপর জলস্তর এতটাই বেড়েছে যে সেখান দিয়ে ট্রেন চালানো মুশকিল হচ্ছে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু ট্রেন বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। ভাসাই থেকে ভিরার পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে ট্রেন চলাচল। স্কুল, কলেজ গত সোমবার থেকেই বন্ধ। অফিসেও মানুষজন পৌঁছতে পারছেন না। লোকাল ট্রেন যদি একেবারেই স্তব্ধ হয় তবে অনেক অফিসই ফাঁকা যাবে। এদিকে আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস।
এবছর বর্ষা শুরুর আগেই মৌসম ভবন পূর্বাভাস দিয়েছিল যে এবার ভারত জুড়ে স্বাভাবিক বৃষ্টি হলেও পশ্চিম ভারতে প্রবল বৃষ্টি হবে। সে পূর্বাভাস সত্যি করে এবার প্রাক বর্ষার মুম্বইকে ট্রেলার দেখিয়ে দিয়েছিল বর্ষা। আভাস দিয়েছিল বর্ষায় কেমন দিন অপেক্ষা করছে মুম্বইবাসীর জন্য। এখন বোঝা যাচ্ছে কী পরিস্থিতি আষাঢ়েই। এখনও তো গোটা বর্ষা পড়ে আছে। যেভাবে মুম্বইয়ের হাল ক্রমশ বেহাল হচ্ছে তাতে ইতিমধ্যেই নৌসেনা ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর তৈরি রয়েছে। তেমনই জানিয়েছেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ।