মুম্বই তো জলের তলায় চলে গেছে। তার আশপাশের বিশাল এলাকা জুড়েও একই পরিস্থিতি। অধিকাংশ মানুষই গৃহবন্দি। মুম্বই বলেই নয়, মহারাষ্ট্রের একটা অংশ প্রবল বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত। বৃষ্টিতে জনজীবন তো ব্যাহত হচ্ছেই, সেইসঙ্গে মৃত্যুও হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত ৩৯ জনের মৃত্যু খবর মিলেছে। যে মৃত্যুগুলির প্রতিটিই হয়েছে বৃষ্টির কারণে। কোথাও ভেঙে পড়েছে পাঁচিল, কোথাও বন্ধ গাড়িতে জলে আটকে মৃত্যু হয়েছে।
সবচেয়ে বড় ঘটনাটি ঘটেছে মালাডে। মালাডের পিমপ্রিপাড়া এলাকায় একটি স্কুলের দেওয়াল ধসে পড়ে মৃত্যু হয়েছে ২১ জনের। বিশাল ধ্বংসস্তূপ যতই সরানো হচ্ছে ততই মৃতদেহ বার হচ্ছে। স্কুলের দেওয়াল ঘেঁষে বহু মানুষের বসবাস ছিল। ছোট ছোট কুঁড়ে ঘর করে থাকতেন তাঁরা। পরিবার নিয়ে সেখানেই দিনের পর দিন কাটিয়েছেন। ভাবতে পারেননি স্কুলের পাঁচিলটাই একদিন ভেঙে পড়বে তাঁদের ঘাড়ে। মুম্বইয়ের দমকল বিভাগ স্তূপ সরিয়ে মানুষজনকে উদ্ধারের কাজ চালাচ্ছে।
প্রায় একই ঘটনা ঘটেছে পুনেতেও। এখানে একটি কলেজের পাঁচিল ধসে পড়ে পাঁচিল লাগোয়া কুঁড়ে ঘরের ওপর। সেখানে পাঁচিল চাপা পড়ে ৭ জনের মৃত্যু হয়। আরও দেহ ধ্বংসস্তূপের মধ্যে থাকতে পারে বলে মনে করছেন উদ্ধারকারীরা। সোমবার রাতে মালাড সাবওয়েতে বিশাল জল জমে যায়। সেই জলে আটকে পড়ে একটি এসইউভি। গাড়ির মধ্যে আটকে পড়েন দুজন। বন্ধ গাড়ি থেকে তাঁরা আর বার হতে পারেননি। গাড়িতেই দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয় মধ্য ত্রিশের ২ ব্যক্তির।
মুম্বইয়ের কাছে কল্যাণ শহরে একটি স্কুলের বাউন্ডারি দেওয়াল আচমকাই ভেঙে পড়ে। দেওয়ালে চাপা পড়ে মৃত্যু হয় ৩ জনের। এখানে অনেকেই এই দেওয়াল চাপা পড়ে আহত হন। জবাহর-এ একটি নদী কুল উপচে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে ২ জনকে। তাঁদেরও মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া নানা ঘটনায় ৭৮ জন আহত হয়েছেন।
খোদ মুম্বই শহরে ১৫০টি বেস্টের বাস বিভিন্ন জায়গায় দাঁড়িয়ে পড়েছে। জলের জন্য আটকে পড়েছে সেগুলি। কখন সেগুলি ফের চলবে তা এখনও পরিস্কার নয়। অধিকাংশ জায়গায় জল বুক সমান। কোথাও তার চেয়েও বেশি। মঙ্গলবার দুপুরের দিকে বৃষ্টি একটু কমে আসে। দেখা গেছে বৃষ্টি একটু কমতেই বহু মানুষ বাড়ি থেকে বেরিয়ে বিভিন্ন দোকানে ভিড় জমান। সকলেই চাইছেন বাড়িতে খাবার মত যা পাওয়া যায় মজুত করে রাখতে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা