মুম্বই ও তার আশপাশের বিশাল এলাকা জুড়ে একটানা বৃষ্টি হয়েই চলেছে। টানা দেড়দিন ধরে বৃষ্টি ইতিমধ্যেই বহু এলাকাকে জলের তলায় নিয়ে চলে গেছে। ক্রমশ জলস্তর বাড়ছে। কারণ বৃষ্টি হয়েই চলেছে। প্রায় থমকে যাওয়া মুম্বই থেকে কোলাপুর যাতায়াত করে মহালক্ষ্মী এক্সপ্রেস। প্রবল বৃষ্টির মধ্যেই চলছিল ট্রেনটি। কিন্তু শুক্রবার রাতে ট্রেনটি ভানগানি স্টেশনের কাছে এক জায়গায় আটকে যায়। চারপাশে তখন জল আর জল। ট্রেনের সামনে ও পিছনে হুহু করে বাড়ছে জলস্তর। প্রায় ৬ ফুট জলের তলায় এলাকা। ট্রেনের লাইনেও জল উঠে এসেছে।
এই অবস্থায় ট্রেন এগোনো সম্ভব হয়নি চালকের। থমকে দাঁড়িয়ে পড়ে ট্রেনটি। যেখানে দাঁড়ায় সেখানেও চারপাশে জল। কোথাও কেউ নেই। ট্রেনের দেড় হাজার যাত্রী আতান্তরের মধ্যে পড়েন। ক্রমশ তাঁদের সঙ্গে থাকা পানীয় জল শেষ হয়। খাবার শেষ হয়। সারা রাত কেটে যায় এভাবেই। তারমধ্যেই তাঁরা বারবার সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁদের দুর্বিষহ অবস্থার কথা জানিয়ে ভিডিও, ছবি পোস্ট করতে থাকেন। সাহায্যের আর্জি জানাতে থাকেন।
মহালক্ষ্মী এক্সপ্রেসের যাত্রীদের উদ্ধার করা সড়কপথে সম্ভব ছিল না। কারণ চারধার জলের তলায়। এদিকে গোটা ট্রেনের যাত্রীদের আতঙ্ক বাড়ছিল। সঙ্গে পানীয় জলটুকু নেই। অথচ বৃষ্টি হয়েই চলেছে। জল বাড়ছে। এই অবস্থায় ভারতীয় বায়ুসেনার ২টি হেলিকপ্টার উড়ে যায় সেখানে। সেইসঙ্গে মুম্বই, থানে ও পুনে থেকে বোট নিয়ে ছুটে যান এনডিআরএফ কর্মীরা। জলপথে ও আকাশপথে যাত্রীদের সকলকে উদ্ধার করার কাজ শুরু হয়। তাঁদের পৌঁছে দেওয়া হয় পানিয় জল।
টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত মুম্বই শহর। যদিও এদিন শনিবার হওয়ায় অনেকটা সুবিধা হয়েছে। অধিকাংশ অফিস বন্ধ। ফলে অফিস যাত্রীদের চাপ অনেকটাই কম। এদিকে লাইনে জল থাকায় ট্রেন অনেক জায়গায় ধীরে চলছে। যার জেরে বিভিন্ন রুটে ট্রেন লেট করছে। লোকাল ট্রেন লেট করায় সমস্যায় পড়েন বহু যাত্রী। সড়কপথে যে যাবেন তারও উপায় নেই। একে মুম্বইতে বাস প্রায় নেই বললেই চলে। কেবল বেস্ট-এর বাস ভরসা। যাঁদের গাড়ি রয়েছে তাঁরাও বার করতে ভরসা পাচ্ছেন না। কারণ মুম্বইয়ের বিভিন্ন প্রান্ত জলের তলায় চলে গেছে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা