National

অন্ত্যেষ্টি সম্পূর্ণ, সমুদ্রকে সাক্ষী রেখে গুরুর পাশেই সমাধিস্থ করুণানিধি

বিকেল ৪টে। রাজাজি হলের বাইরে তখন লাখো মানুষের ভিড়। সেখান থেকে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বার করে আনা হয় দাক্ষিণাত্যের অন্যতম উজ্জ্বল রাজনৈতিক তারকা এম করুণানিধির কাচের কফিনবন্দি দেহ। ফুলের সাজে মুড়ে দেওয়া গাড়িতে দেহ তোলা হয়। মাথার কাছটা একটু উঁচু করে রাখা হয়। তারপর মেরিনা বিচের উদ্দেশে শুরু হয় যাত্রা। তাঁদের প্রিয় নেতার এই শেষ যাত্রায় তাঁকে দেখতে তখন রাস্তায় জনসমুদ্র। লক্ষ লক্ষ মানুষ পুরো রাস্তা মুড়ে ফেলেছেন। গাড়ি এগোতেই পারছে না। অবশেষে শেষ বিকেলে মেরিনা পৌঁছয় সেই গাড়ি। মানুষের চোখে তখন জল।

মেরিনা বিচে যেখানে তাঁর গুরু আন্নাদুরাইয়ের সমাধি তার পাশেই অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করে করুণানিধিকে সমাধিস্থ করা হয়। যে কফিনে তাঁকে সমাধিস্থ করা হয় তার ওপর লেখা ছিল তামিল ভাষায় একটি কথা। যা নাকি করুণানিধি তাঁর পুত্র স্ট্যালিনকে ৩০ বছর আগেই বলে গিয়েছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর কফিনে যেন কথাটা লিখে দেওয়া হয়। তাই হল। যেটা লেখা হল তার মানে হল, যিনি বিশ্রাম না নিয়ে চিরকাল কাজ করে গেলেন, তিনি এখন বিশ্রাম নিচ্ছেন।


এদিন সকাল থেকে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে হাজির হয়েছিলেন বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আসেন সকালে। দুপুরে আসেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। এছাড়া গত মঙ্গলবার রাত থেকেই ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আসেন কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী এইচডি কুমারস্বামী, কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন, তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও, অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু, পুডুচেরির মুখ্যমন্ত্রী নারায়ণস্বামী সহ বহু ব্যক্তিত্ব।

এদিন করুণানিধিকে যখন চন্দনকাঠের কফিনে সমাধিস্থ করা হচ্ছে তখন মেরিনা বিচ ছাড়িয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের ভিড় পৌঁছে গেছে দূরদূরান্তে। তাঁদের চোখের জল আর ভালবাসার মধ্যে দিয়েই মেরিনা বিচের বালিতে চিরনিন্দ্রায় চলে গেলেন তামিলনাড়ু রাজনীতির কিংবদন্তী ব্যক্তিত্ব করুণানিধি। রেখে গেলেন অনেক স্মৃতি আর রাজনীতির বিচক্ষণ পাঠ।


Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button