চলে গেলেন নবনীতা দেবসেন। রেখে গেলেন তাঁর অসামান্য কীর্তি। তাঁর এক একটি লেখা এক একটি অমূল্য রতনের মত বাংলা সাহিত্যকে যুগ যুগ ধরে সমৃদ্ধ করবে। সেই নবনীতা দেবসেন চলে গেলেন বৃহস্পতিবার। সন্ধে ৭টা ৩৫ মিনিটে তাঁর জীবনাবসান হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। দুরারোগ্য ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। বেশ কিছুদিন ধরে তাঁর শারীরিক অসুস্থতা বেড়ে গিয়েছিল। হাঁটতে পারতেন না। বুধবার থেকেই তাঁর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। অবশেষে বৃহস্পতিবার সন্ধেয় মৃত্যু হয় তাঁর। তাঁর প্রয়াণ সংবাদ পাওয়ার পর তাঁর হিন্দুস্তান পার্কের বাড়িতে বহু গুণীজনের সমাবেশ হয়। সকলেই হাজির হন বাংলা সাহিত্যের এই প্রতিভাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে।
নবনীতা দেবসেনের পিতা-মাতা ছিলেন সাহিত্য জগতেরই মানুষ। ফলে তিনি বড়ই হয়েছিলেন সাহিত্য চর্চার মধ্যে। হার্ভার্ড, কেমব্রিজে পড়াশোনা করেন। পরবর্তীকালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগে অধ্যাপনা করেন। ১৯৬০ সালে তাঁর সঙ্গে বিয়ে হয় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের। যদিও পরবর্তীকালে বিচ্ছেদ হয়ে যায়। অমর্ত্য সেন ও নবনীতা দেবসেনের ২ কন্যা অন্তরা ও নন্দনা। নন্দনা অভিনেত্রী হিসাবে যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছেন। ১৯৯৯ সালে নবনীতা দেবসেন ‘নব নীতা’ লেখার জন্য সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার পান। ২০০০ সালে পান পদ্মশ্রী সম্মান। এছাড়া জীবনে নানা পুরস্কারে ভূষিতা হয়েছেন তিনি।
নবনীতা দেবসেনের মৃত্যুতে গভীর শোক ব্যক্ত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর পরিবারের সকলকে সমবেদনা জানিয়েছেন। নবনীতা দেবসেনের মৃত্যু বাংলা সাহিত্যের অপূরণীয় ক্ষতি বলে মেনে নিচ্ছেন সকলেই। বাংলায় নারী সাহিত্যিকদের মধ্যে তিনি অন্যতম সেরা ছিলেন। একসময়ে নন্দন চত্বরে একটি বইমেলারও আয়োজন করতেন তিনি। লেখার পাশাপাশি সামাজিক নানা বিষয়ে তিনি নিজের সুচিন্তিত মন্তব্য তুলে ধরতেন।