চলে গেলেন হাঁদা ভোঁদা, বাঁটুলদের জনক নারায়ণ দেবনাথ
অন্য লোকে চলে গেলেন হাঁদা ভোঁদা, নন্টে ফন্টে বা বাঁটুলের জনক নারায়ণ দেবনাথ। সেই সঙ্গে শেষ হল বাংলাকে কমিক স্ট্রিপে মজতে শেখানো একটা যুগের।
বাঙালির কমিক স্ট্রিপ সম্বন্ধে ধারনা ছিল। কিন্তু ৬০-এর দশকে এক বাঙালি নিপাট বাঙালি কয়েকটি চরিত্রে বাংলার মন কাড়লেন। যে চরিত্রদের মধ্যে বাংলার ছোঁয়া থাকল।
বাঙালির মনে হত এরা তাঁদেরই আশপাশের কিছু চেনা ছেলেপুলে। কেউ দাপুটে, কেউ বুদ্ধিমান, কেউ দুষ্টু তো কেউ মহাবলবান। কিন্তু এরা কোথাও গিয়ে বাঙালি। ফলে এতে মজতে সময় লাগেনি বাঙালির।
১৯৬২ সালে হাঁদা ভোঁদা, ১৯৬৫ সালে বাঁটুল দি গ্রেট আর ১৯৬৯ সালে নন্টে ফন্টে-র জন্ম দিয়ে নারায়ণ দেবনাথ গোটা বাংলাকে মাতিয়ে দিলেন কমিক স্ট্রিপের আনন্দে।
দমফাটা হাসি আর গোগ্রাসে গেলার জন্য বাঙালিকে ব্যস্ত করা সেই মানুষটা চলে গেলেন সকলকে ছেড়ে। রয়ে গেল শুধু তাঁর সৃষ্টি। বাঙালির মনে অমর হয়ে রইল হাঁদা, ভোঁদা, বাঁটুল, নন্টে, ফন্টে, কেল্টুদারা।
বেশ কিছুদিন ধরেই নারায়ণ দেবনাথ অসুস্থ ছিলেন। হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। ব্লাড স্টুলের সমস্যা নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন হাসপাতালে। গত ২৪ ডিসেম্বর থেকে ভর্তি ছিলেন হাসপাতালে। বয়স একটা বড় কারণ হয়ে উঠেছিল তাঁর শারীরিক অসুস্থতা বৃদ্ধির।
পদ্মশ্রী সম্মানে সম্মানিত নারায়ণ দেবনাথ জীবনের শেষ লড়াইটা শেষ করলেন মঙ্গলবার সকাল সওয়া ১০টা নাগাদ। শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন তিনি। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর।
তবে নারায়ণ দেবনাথ যে পদ্মশ্রী সম্মান পেয়েছেন তা হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে জেনে গেলেন তিনি। গত বৃহস্পতিবারই মন্ত্রী অরূপ রায় ও অতিরিক্ত মুখ্যসচিব নারায়ণ দেবনাথের হাতে পদ্মশ্রী সম্মান তুলে দেন।
নারায়ণ দেবনাথ নিজেই ছিলেন একটা যুগ। বাংলার সাহিত্য জগতে তাঁর নাম চিরকাল স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। তাঁর নাম চিরকাল বেঁচে থাকবে সব বয়সের বাঙালির হৃদয়ে।