প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মাসিক রেডিও অনুষ্ঠান ‘মন কি বাত’ হয় প্রতি মাসের শেষ রবিবার। এদিন সেই রবিবারটাই কাকতালীয়ভাবে ২৬/১১। দিনটি চিরকাল ভারতীয় ইতিহাসে লেখা থাকবে। তবে এক কলঙ্কময় অধ্যায় হিসাবে। মুম্বই হামলার নবম বর্ষপূর্তিতে এদিন মন কি বাতে খুব স্বাভাবিকভাবেই জায়গা করে নিয়েছে সন্ত্রাসবাদ। এদিন প্রধানমন্ত্রী মন কি বাতে মুম্বই হামলায় প্রাণ হারানো মানুষজনকে কুর্নিশ জানিয়ে বলেন, সারা বিশ্বে এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা সন্ত্রাসবাদ। তাকে নির্মূল করতে সারা বিশ্বকে একজোট হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী এদিন দাবি করেন, বিশ্বের বিভিন্ন ফোরামে সন্ত্রাসবাদের ভয়াবহতা সম্বন্ধে ভারত অন্য দেশগুলিকে গত ৪০ বছর ধরে সচেতন করে এসেছে। প্রথমের দিকে বিশ্বের অন্যান্য দেশ ভারতের বক্তব্যকে গুরুত্ব সহকারে না নিলেও এখন বুঝতে পারছে ভারতের এই এতদিন ধরে উদ্বেগ প্রকাশ করার কারণটা কী? ভারতকে বুদ্ধদেব, মহাবীর, গুরু নানক, মহাত্মা গান্ধীর মাটি বলে ব্যাখ্যা করে প্রধানমন্ত্রী এদিন বলেন, তাঁরা শান্তির পক্ষে বক্তব্য রেখেছেন। কিন্তু তাঁদের দেখানো মানবিক দিকগুলিকে সন্ত্রাসবাদ শেষ করে দিতে উদ্ধত।
মুম্বই হামলার জন্য যেমন ভারতীয় ইতিহাসে এই দিনটি গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই গুরুত্বপূর্ণ অন্য একটি কারণেও। ২৬ নভেম্বর তারিখেই ভারতীয় সংবিধান গৃহীত হয়। তাই দিনটি সংবিধান দিবস বলেও খ্যাত। প্রধানমন্ত্রী এদিন ভারতীয় সংবিধানকে দেশের আত্মা বলে ব্যাখ্যা করেছেন। ভারতীয় সংবিধান দেশের দরিদ্র ও দুর্বল মানুষের স্বার্থরক্ষা সুনিশ্চিত করতে চেয়েছে। সংবিধানের রূপকার হিসাবে পরিচিত বাবা সাহেব আম্বেদকর দেশকে এক শক্তিশালী রূপ দিতে চেয়েছিলেন বলেও এদিন জানান প্রধানমন্ত্রী।
আগামী ৪ ডিসেম্বর ভারতীয় নৌসেনা দিবস। সেকথা মাথায় রেখে এদিন ভারতীয় নৌসেনার মহান ইতিহাসের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। চোল সাম্রাজ্য থেকে শিবাজি, সেই সময় থেকেই ভারতীয় নৌসেনার গুরুত্বের কথা তুলে ধরেন তিনি।
এদিন আরও বেশ কিছু বিষয় নরেন্দ্র মোদীর মন কি বাতে জায়গা পেয়েছে। ২০২২ সালের মধ্যে ফসলে ইউরিয়ার ব্যবহার ৫০ শতাংশ কমিয়ে ফেলার জন্য দেশের কৃষকদের আহ্বান জানান তিনি।
এদিন প্রধানমন্ত্রীর মন কি বাত অনুষ্ঠানকে গুজরাটে বিজেপির ভোটপ্রচারের সঙ্গে জুড়ে দেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। গুজরাটের ৫০ হাজার বুথে সরাসরি মন কি বাত অনুষ্ঠানে যোগ দেন বিজেপির নেতা কর্মীরা।