National

‘পরীক্ষা পর চর্চা’য় ‘ছাত্র বন্ধু’ নরেন্দ্র মোদী

নিজের আত্মবিশ্বাস নিজেরা তৈরি কর। ভাষণ শুনলে আত্মবিশ্বাস বাড়ে না। চেষ্টা করে আত্মবিশ্বাস বাড়াতে হয়। স্বামীজিও আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর কথা বলতেন। নিজেরাই নিজেদের ভবিষ্যৎ ঠিক কর। অন্য কেউ যেন তোমাদের ভবিষ্যৎ তৈরি না করে। ৩৩ কোটি দেবদেবীর পুজো করলেও নিজের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে হবে। প্রয়োজনে যোগা কর। তাতে অনেকটাই আত্মবিশ্বাস বাড়ে। শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর তালকোটরা মঞ্চে দাঁড়িয়ে ছোট বন্ধুদের এই ভাষাতেই গাইডলাইন দিলেন তাদের প্রবীণ বন্ধু। হয়তো তিনি বিভিন্ন ভাষা জানেন না। তা বলে ভাষা বন্ধুদের সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি তাঁর কাছে। হিন্দিতেই এদিন দেশের অগণিত ছাত্রছাত্রীকে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমায় সুপরামর্শ দিলেন তাদের ‘বন্ধু’ প্রধানমন্ত্রী।

তাঁর ‘মন কি বাত’-এর আসরের অপেক্ষায় ১ মাস ধরে অপেক্ষা করে থাকেন দেশবাসী। ‘চায়ে পে চর্চা’য় প্রধানমন্ত্রীর নানা বক্তব্যের জনপ্রিয়তাও কিছু কম নয়। রাজনীতির ময়দানে তিনি দুঁদে রাজনীতিবিদ। দেশের মানুষের কাছে তিনি প্রধানমন্ত্রী। আর দেশের পড়ুয়াদের কাছে তিনি একজন বন্ধু। দিল্লিতে দাঁড়িয়ে প্রাণখুলে পড়ুয়াদের সেই আশ্বাসই দিলেন নরেন্দ্র মোদী। আর কিছুদিন পরেই দেশজুড়ে শুরু হয়ে যাবে বোর্ডের পরীক্ষা। পরীক্ষায় ভাল ফলাফলের জন্য চাই আত্মবিশ্বাস। আত্মবিশ্বাসের অভাবেই অনেকসময় পড়ুয়াদের মধ্যে কাজ করে ব্যর্থতার ভয়। সেই ভয় কাটাতেই দেশের নানা প্রান্তের ছাত্রছাত্রীদের মুখোমুখি হন প্রধানমন্ত্রী। সামনাসামনি বা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পড়ুয়ারাও প্রাণখুলে প্রশ্ন করতে থাকে প্রধানমন্ত্রীকে। আর তার উত্তর দেন তিনি।


সামনেই যাদের পরীক্ষা সেই স্কুল পড়ুয়াদের জন্য দিল্লির তালকোটরা স্টেডিয়ামে ‘পরীক্ষা পর চর্চা’ অনুষ্ঠানের এদিন কেন্দ্রবিন্দুই ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নিজের পাঠশালার পরিবেশ যাতে গুরুগম্ভীর না হয়ে পড়ে সেজন্য এদিন বক্তব্যের শুরুতেই মোদী বললেন, আমি আজ প্রধানমন্ত্রী নই, তোমাদের বন্ধু।

তাঁর মধ্যে ছাত্রসত্ত্বা এখনও জাগিয়ে রাখার জন্য তাঁর শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। হাস্যরসের মোড়কে পরীক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাসী হওয়ার পরামর্শ দেন। বলেন, দেবদেবীর পুজো করলেই আত্মবিশ্বাস পাওয়া যায় না, এজন্য প্রয়োজন নিজের ওপর বিশ্বাসটা গড়ে তোলা।


পড়াশোনায় মনঃসংযোগের জন্য প্রধানমন্ত্রী পড়ুয়াদের যোগ অনুশীলনের পরামর্শ দেন। তিনি বলেছেন, নিয়মিত যোগ অনুশীলনের মাধ্যমেই আত্মবিশ্বাস গড়ে ওঠে। প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ, কোনও একজনকে প্রথমে ঠিক করতে হবে তার ভেতরে কী রয়েছে। এক্ষেত্রে বন্ধুবান্ধবদেরও একে অপরকে সাহায্য করতে হবে। ক্রীড়া জগতের তারকাদের কাছে কেউ জানতে চান না, তাঁদের ডিগ্রি কী। তাই নম্বরের খেলায় বেশি নজর দেওয়া উচিত নয়। নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। অন্য কারুর সঙ্গে নিজের তুলনা করা উচিত নয়।

পড়ুয়াদের প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ, যখন যে কাজই করবে সেই কাজে নিবিষ্ট হয়ে যেতে হবে। প্রাক্তন ক্রিকেটার শচীন তেন্ডুলকরের চিন্তাভাবনার উদাহরণ দিয়ে এ কথা বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজের পরীক্ষা-নিরীক্ষা বন্ধ করতে হবে। অন্তরে যে বিদ্যার্থী রয়েছে, তাকে চিরদিন বজায় রাখতে হবে। তাঁর পরামর্শ, এটা ভাবার দরকার নেই যে কেউ পরীক্ষা নিচ্ছে। নিজেকেই পরীক্ষক ভাবতে হবে। ভাবতে হবে যে, নিজেকেই নিজের ভবিষ্যৎ স্থির করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেছেন, আমরা শিশুদের ভাষায় কথা বলতে পারি না। এর আগে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ণমন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর পড়ুয়াদের সঙ্গে আলাপচারিতার এই উদ্যোগের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করেন।

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button