শান্তিনিকেতনে এসে বিশ্বভারতীর সমাবর্তনে আচার্য হিসাবে ছাত্রছাত্রীদের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এদিন ছিলেন কখনও শিক্ষক, কখনও পথপ্রদর্শক। ছাত্রছাত্রীদের আগামী দিনে গ্রামোন্নয়ন সহ বিভিন্ন সৃজনশীল কাজে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। রবি ঠাকুরের গানের কলিতে একলা চলার ডাককে জীবনে কাজে লাগানোর কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
এদিন সকালে প্রধানমন্ত্রী চপার থেকে নামার পর সেখানে তাঁকে উত্তরীয় ও পুষ্পস্তবক দিয়ে অভিবাদন জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হাল্কা মেজাজে হাস্যমুখে দুজনের দু-চারটি কথা আদানপ্রদানও হয়। পরে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সঙ্গে করে চারদিক ঘুরে দেখেন। এদিন মঞ্চেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একমঞ্চে বসে থাকতে দেখা যায়।
এদিন প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের এগিয়ে চলার প্রশংসা বারবার উঠে এসেছে। বাংলাদেশ সদ্য মহাকাশে পাঠিয়েছে তাদের বঙ্গবন্ধু নামক কৃত্রিম উপগ্রহ। এজন্য এদিন সে দেশের প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান নরেন্দ্র মোদী। আগামী দিনে ২ দেশ হাতে হাত মিলিয়ে মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নতি, ২ দেশের যুব সমাজের সমস্বপ্ন নিয়েও বক্তব্য রাখেন তিনি। বাংলাদেশ সরকার লক্ষ্য স্থির করেছে যে তাদের দেশের সর্বত্র ২০২১ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেবে। সেই লক্ষ্য স্থির করার জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান নরেন্দ্র মোদী। এদিন শান্তিনিকেতনে বাংলাদেশের একটি নতুন ভবনের উদ্বোধনও করা হয়। প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে জানান, শান্তিনিকেতন ভারতের যতটা, বাংলাদেশেরও ততটা। পরে ২ দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথাও হয়।
এদিকে এদিন ২ দেশের প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত থাকায় বিশ্বভারতীর প্রাঙ্গণে ছিল নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বন্দোবস্ত। ছাত্রছাত্রীদের এদিন অনেক আগেই অনুষ্ঠান প্রাঙ্গণে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু সেখানে প্রবল গরমের মাঝে পানীয় জল না থাকায় সমস্যার সৃষ্টি হয়। কয়েকজন ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে অবশ্য জলের পাউচ এনে অবস্থা সামাল দেওয়ার চেষ্টা হয়। কিন্তু ততক্ষণে সকলেরই গলা শুকিয়ে কাঠ। প্রবল গরমে অনেকেই অসুস্থ বোধ করছিলেন। তাই জলের পাউচ দেওয়া শুরু হতে তা সংগ্রহ করতে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়।