মহাকাশ গবেষণায় ইতিমধ্যেই বিশ্বের কাছে সম্ভ্রম আদায় করে নিয়েছে ভারত। বিজ্ঞানীদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও মেধায় ভর করে একের পর এক মহাকাশ গবেষণায় বিরল সাফল্যের অধিকারী হয়েছে। এবার সেই মুকুটে যুক্ত হল নবতম পালক। মহাকাশে চতুর্থ মহাশক্তিধর দেশ হিসাবে নিজেদের জায়গা তৈরি করল ভারত। মহাকাশে নির্দিষ্ট কক্ষে ঘোরা স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহ ধ্বংস করল ভারতের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি স্যাটেলাইট ধ্বংসকারী ক্ষেপণাস্ত্র।
এ-স্যাট নামে ক্ষেপণাস্ত্রটি সঠিক লক্ষ্যেই আঘাত করে। পুরো মিশন সাফল্যের সঙ্গে সম্পূর্ণ হয় মাত্র ৩ মিনিটে। অত্যন্ত জটিল এই অপারেশনের নাম ছিল ‘মিশন শক্তি’। এদিন দুপুরে দেশবাসীকে একথা জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
মিশন শক্তির সাফল্য মহাকাশে ভারতকে বিশ্বের চতুর্থ মহাশক্তিধর রাষ্ট্রে পরিণত করল। এতদিন ‘লো অরবিট স্যাটেলাইট’ ধ্বংসে সক্ষম রাষ্ট্র ছিল আমেরিকা, চিন ও রাশিয়া। এই ৩ রাষ্ট্রের পর ভারতই হল চতুর্থ রাষ্ট্র যারা এদিন লো অরবিট স্যাটেলাইটকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়ে ধ্বংস করে দিল। যদিও প্রধানমন্ত্রী পরিস্কার করে দিয়েছেন এই সাফল্য ভারতের নিজের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে। ভারত মহাকাশ যুদ্ধের বিরুদ্ধে। তাই মহাকাশ যুদ্ধে সাফল্যের উদ্দেশ্য নিয়ে একাজ হয়নি। এতদিন ভারত স্থল, জল ও আকাশে ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়ে শত্রুকে ধ্বংস করতে সক্ষম ছিল। এদিনের পর মহাকাশেও সেই শক্তি অর্জন করল তারা।
প্রধানমন্ত্রী এদিন ট্যুইট করে জানান পৌনে ১২টা থেকে ১২টার মধ্যে তিনি দেশের জন্য একটি অতি প্রয়োজনীয় বিষয়ে ভাষণ দিতে চলেছেন। একথা সামনে আসার পরই কানাঘুষো শুরু হয়ে যায়। নির্বাচনী আচরণবিধি লাগু হয়ে গেছে। এই অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে জনগণের কাজে লাগে এমন কোনও ঘোষণা করা সম্ভব নয়। তা নির্বাচনী বিধিভঙ্গের আওতায় পড়বে। তাহলে কী ঘোষণা করতে চলেছেন তিনি?
এদিকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠক চলছে। তাহলে কী ঘোষণা? সাধারণ মানুষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলি নড়েচড়ে বসে। কৌতূহলের পারদ চড়তে থাকে। এদিকে ১২টা পার করেও প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা শুরু না করায় জল্পনা আরও তীব্র হয়। আরও চিন্তা বাড়ে গত ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বরের কথা মাথায় রেখে। কারণ সেবারও খুব অল্প সময়ের নোটিসে প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে নোটবন্দি করেছিলেন। যদিও ১২টা বাজার কিছু পরেই প্রধানমন্ত্রী যখন মহাকাশ গবেষণায় ভারতের এই বিরল সাফল্যের কথা ঘোষণা করেন তখন সব জল্পনার অবসান হয়। ভারতের এদিনের সাফল্য অবশ্যই ভারতবাসীর জন্য অত্যন্ত গর্বের।