বাংলা কবিতা আর সংগ্রামের ভূমি। জয়দেব, লালন ফকির, বিদ্যাপতি, কবিগুরু যেমন এই বাংলাকে সমৃদ্ধ করেছেন, তেমনই স্বাধীনতা বিপ্লবে সূর্য সেন, ক্ষুদিরাম বোস, নেতাজী সুভাষচন্দ্র বোস লড়াই করেছেন। এদিন ব্রিগেড থেকে এভাবেই বাংলার গৌরব ব্যাখ্যা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তুলে আনেন রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব, স্বামী বিবেকানন্দের কথা। সেইসঙ্গে জানান, একসময়ে কিছু স্বপ্নকে সাথী করে সব ছেড়ে তিনি বেরিয়ে পড়েছিলেন তখন এই বাংলাতেই রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের স্বামী আত্মস্থানন্দজি মহারাজ তাঁকে পথ দেখিয়েছিলেন। তাঁর জীবন বদলাতে তাই বাংলার বড় ভূমিকা রয়েছে।
দুপুরে মাটিগাড়ার সভা সেরে কলকাতায় হাজির হন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। হেলিকপ্টারে নামেন রেস কোর্সে। সেখান থেকে তাঁর কনভয় ৪টে ১০ নাগাদ ব্রিগেডে পৌঁছয়। বক্তব্য রাখতে গিয়ে ব্রিগেডে এমন ভিড় এর আগে কখনও হয়নি বলে শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী। তারপর এক এক করে পাকিস্তানে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক, এয়ার স্ট্রাইক, মহাকাশে ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়ে কৃত্রিম উপগ্রহ ধ্বংস থেকে বারাণসী থেকে কলকাতা জলপথে যোগাযোগ, একের পর এক সাফল্যের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তারপরই সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে নাম না করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে খোঁচা মারেন। সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের প্রমাণ চাওয়া নিয়ে কটাক্ষ করেন তিনি।
তৃণমূলের পাশাপাশি এদিন কংগ্রেসকেও তুলোধোনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, কংগ্রেস গত মঙ্গলবার যে ইস্তেহার প্রকাশ করেছে তাতে কংগ্রেস জিতে এলে সেনা জওয়ানদের রক্ষাকবচ আফস্পা তুলে নেবে বলে জানিয়েছে। এতে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা হ্রাস হবে। যে আফস্পা তুলে নিলে সেনা জওয়ানরা সমস্যায় পড়বেন সেই আফস্পা প্রত্যাহারের কথা বলে আসলে সেনাদের দুর্বল করতে চাইছে কংগ্রেস বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী।
কটাক্ষের সুরে নরেন্দ্র মোদী বলেন, কদিন আগে এই ব্রিগেডেই একটা মেলা বসেছিল। সেখানে জলসায় উপস্থিত ছিলেন দেশের বিভিন্ন বিরোধী নেতারা। তাঁরা একসঙ্গে হাত তুলে মোদী হঠাও স্লোগান দেন। মোদীর প্রশ্ন, কেন মোদী হঠাও? মোদী কী অন্যায় করেছে যে তাকে হঠাতে হবে? মোদীর দাবি, তাঁর অপরাধ তিনি দরিদ্রদের জন্য ঘর বানিয়ে দিয়েছেন। দরিদ্রদের জন্য শৌচালয় বানিয়ে দিয়েছেন। মহিলাদের রান্নার গ্যাস দিয়েছেন!
রাজ্যে সরকারি কর্মচারিদের ডিএ চাহিদামত না বাড়ানো আর সপ্তম বেতন কমিশনের সুবিধা না পাওয়া নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে। সেকথা মাথায় রেখে এদিন মোদী বলেন এ রাজ্যে সপ্তম বেতন কমিশন লাগু হচ্ছে না। ত্রিপুরাতেও তাই করেছিল বামরা। কিন্তু সেখানে বিজেপি সরকার গঠন হওয়ার পর ত্রিপুরার সরকারি কর্মীরা সপ্তম বেতন কমিশনের সুবিধা পেতে শুরু করেছেন।