National

এত বছরেও ৩৭০ ধারা স্থায়ী করেননি কেন, লালকেল্লা থেকে প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর

অনেকের মনের মধ্যেই ছিল যে ৩৭০ ধারা বিলোপ করা হোক। কিন্তু কেউ সাহস করে এগিয়ে আসছিলেন না। বরং অপেক্ষা করছিলেন কে করবে সেই কাজ। তাঁর সরকার কোনও কাজকে এড়িয়ে যায়না। ফেলেও রাখে না। তাই দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার ৭০ দিনের মধ্যেই জম্মু কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা ও ৩৫এ ধারা প্রত্যাহার করার সাহস দেখিয়েছে সরকার।

প্রধানমন্ত্রী এদিন কটাক্ষের সুরেই বলেন, আগে ৭০ বছর যারা মানুষের সমর্থন পেয়ে দেশ শাসন করলেন তাঁরা ৩৭০ ধারাকে কেন অস্থায়ী করে রাখলেন? কেন সেটিকে স্থায়ী করলেন না? প্রধানমন্ত্রীর দাবি, আসলে তাঁরাও জানতেন ৩৭০ ধারা ভুল। কিন্তু তাঁরা তা বিলোপের সাহস দেখাননি ভোটের জন্য। এদিন কংগ্রেসের নাম না করলেও প্রধানমন্ত্রীর নিশানায় যে কংগ্রেসই ছিল তা বুঝতে কারও সমস্যা হয়নি।


৭৩ তম স্বাধীনতা দিবসের সকালে মেঘে ঢাকা ছিল দিল্লির লালকেল্লা। তবে উৎসাহের অন্ত ছিলনা। সকালেই সেখানে পৌঁছে যান মোদী মন্ত্রিসভার সব মন্ত্রী। এরপর পৌঁছন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অবশ্য লালকেল্লা আসার আগে মহাত্মা গান্ধীর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তিনি। তারপর হাজির হন লালকেল্লায়। প্রথা মেনে তাঁকে গার্ড অফ অনার দেওয়া হয়। তারপর লাহোরি গেটে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন প্রধানমন্ত্রী। অন্যান্য বছরের মতই ভারতের জাতীয় পতাকা যেন উঠে এসেছিল ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে তৈরি বিশাল গ্যালারিতে। তাদের ৩ রঙের পোশাক পরিয়ে এমনভাবে বসানো হয়েছিল যাতে দূর থেকে দেখে দেশের জাতীয় পতাকা মনে হচ্ছিল।

প্রধানমন্ত্রী লালকেল্লা থেকে কী বলেন সেদিকে নজর ছিল সকলের। সেখানে যে ৩৭০ বড় জায়গা পেতে চলেছে তাও অনুমেয় ছিল। এদিন প্রধানমন্ত্রী ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের পাশাপাশি দেশের উন্নয়ন নিয়েও বক্তব্য রাখেন। ফের এদিন ডিজিটাল লেনদেনের ওপর জোর দেন তিনি। ব্যবসায়ীদের উৎসাহিত করেন ডিজিটাল লেনদেনে নিয়ে। পাশাপাশি দেশের মধ্যে পর্যটনেও বিশেষ জোর দেন প্রধানমন্ত্রী।


তিনি বলেন, অনেক পরিবার এখন ছুটিতে বিদেশে বেড়াতে যান। কিন্তু তাঁদের শপথ নেওয়া উচিত সন্তানদের নিয়ে তার আগে দেশের অন্তত ১৫টি পর্যটন ক্ষেত্রে পৌঁছবেন তাঁরা। সেখানে কিছু জায়গায় বেড়ানোর সমস্যা হতে পারে। পরিকাঠামো সম্পূর্ণ নাও মিলতে পারে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ তবু সেখানে যাওয়া উচিত। প্রয়োজনে কিছুটা সমস্যার মুখোমুখি হওয়া উচিত। জীবন গড়ে তোলার জন্য সমস্যার মুখোমুখি দাঁড়ানোরও প্রয়োজন আছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী এদিন লালকেল্লা থেকে বলেন, বেড়ানোর জন্য অপার প্রকৃতি সাজানো রয়েছে ভারতের উত্তরপূর্বের রাজ্যগুলিতে। কিন্তু সেখানে বড় একটা কেউ যান না। কিন্তু সেখানে যেতে শুরু করলে সেখানে পরিকাঠামো শক্তিশালী করার লোকও এসে পড়বেন। ভারতের সব রাজ্য মিলিয়ে অন্তত ১০০টি পর্যটনক্ষেত্র ঠিকঠাক করে গড়ে তোলার কথা বলেন তিনি।

লালকেল্লায় প্রধানমন্ত্রী এদিন বলেন অনেক কিছু বলা হল, অনেক কিছু বলার রয়ে গেল, তবে তাঁরা কাজ চালিয়ে যাবেন। এদিন প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর জাতীয় সঙ্গীতের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়। পরে প্রধানমন্ত্রী লালকেল্লায় উপস্থিত শিশুদের সঙ্গে মিশে যান। তাদের সঙ্গে হাত মেলান। অনেকে তাঁকে প্রণামও করে। এরপর সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ লালকেল্লা ছেড়ে বেরিয়ে যান প্রধানমন্ত্রী। লালকেল্লায় তখন মাথা উঁচু করে উড়ছে ভারতের জাতীয় পতাকা।

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button