২ দিনের ভারত সফরে এলেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। বলা হচ্ছে এটা নেহাতই সৌজন্য সফর। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ঘরোয়া বৈঠক। কিন্তু সময়টাই সকলকে ভাবাচ্ছে। ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক এখন তলানিরও নিচে গিয়ে ঠেকেছে। আবার পাকিস্তানের পাশে যদি কোনও বড় শক্তি এখন রয়েছে তো তার নাম চিন। আবার চিনের ভেটোতেই ভারতের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হওয়া আটকে রয়েছে। লাদাখকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণার পর ভারত-চিন সীমান্তে একটা অজানা টেনশন পেয়ে বসেছে। এমন এক পরিস্থিতিতে চিনের প্রেসিডেন্টের ভারত সফরে আসাটা নিছকই সৌজন্য সাক্ষাৎ, ঘরোয়া বৈঠক? মেনে নিতে একটু অসুবিধা হচ্ছে বিশেষজ্ঞদের।
শুক্রবার জিনপিং চেন্নাইয়ের মাটি ছোঁন দুপুর ২টোয়। আর তিনি ভারতের মাটি ছুঁতেই তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনায় ভরিয়ে তোলা হয়। তাঁকে সেখানে সনাতনি ‘পূর্ণ কুম্ভ’ অভ্যর্থনায় স্বাগত জানানো হয়। যার মানে হল আম্রপল্লব দিয়ে যেভাবে এখানে শান্তির জল ছেটানো হয়, তেমনভাবেই সম্মানীয় অতিথিদের আম্রপল্লব দিয়ে পুণ্য জল ছিটিয়ে অভ্যর্থনা জানানো। এছাড়া জিনপিংকে স্বাগত জানাতে উপস্থাপিত হয় দক্ষিণ ভারতের থাপ্পাতাম, ভারতনাট্যম, ওইলাট্টম এবং মাইলাট্টম। এরপর চিনা প্রেসিডেন্ট আইটিসি গ্র্যান্ড চোলা হোটেলে বিশ্রাম নেন। বিকেল ৪টে নাগাদ তিনি মমল্লাপুরমের দিকে রওনা দেন। সেখানে তাঁকে অভ্যর্থনা জানাতে দক্ষিণ ভারতীয় সনাতনি পোশাক ভেস্তিতে অপেক্ষা করছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
২ রাষ্ট্রপ্রধান এরপর মহাবলীপুরমে পৌঁছনোর পর জিনপিং ছিলেন একদম ঘরোয়া মেজাজে। কালো প্যান্ট ও সাদা শার্টে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে পায়ে হেঁটে শুরু করেন মহাবলীপুরম দর্শন। মহাবলীপুরমের বিশাল পাথরের গায়ে খোদাই করা মহাভারতের কাহিনি মোদী বুঝিয়ে বলেন জিনপিংকে। এছাড়াও আশপাশের দ্রষ্টব্য স্থানগুলি ঘুরিয়ে দেখান। বুঝিয়ে দেন সেখানকার মাহাত্ম্য। এদিন কার্যত জিনপিংয়ের ট্যুর গাইডে পরিণত হয়েছিলেন মোদী। পরে তাঁরা ২ জনে ডাবের জল খান। দক্ষিণ ভারতীয় পারম্পরিক নৃত্যানুষ্ঠান দেখেন। রাতে ২ জন ডিনারেও উপস্থিত ছিলেন।
শুক্রবারটা কার্যত ঘুরে ঘরোয়া মেজাজেই কেটেছে ২ রাষ্ট্রপ্রধানের। শনিবার ২ জনের মধ্যে বৈঠক। জিনপিং তাঁর সঙ্গে শতাধিক প্রতিনিধি নিয়ে এসেছেন। তা যে নিছক ঘরোয়া বৈঠক করতে নয় তা মোটামুটি সকলের কাছেই পরিস্কার। তবে কী ভারতে চিনা লগ্নি আরও বাড়তে চলেছে? সে প্রশ্নও উঠছে। তার উত্তর হয়তো মিলবে বৈঠকের পর। ২ রাষ্ট্রপ্রধান সাংবাদিক সম্মেলনও করতে পারেন যৌথভাবে। আপাতত সেদিকেই চেয়ে ভারত। আর হয়তো তার চেয়েও বেশি সেদিকে চেয়ে পাকিস্তান। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা