তখন ভোর। সমুদ্র শহর মমল্লাপুরমের সমুদ্র সৈকতে ভোরের সূর্যের আলোটা ক্রমশ চড়া হচ্ছে। একটু পরেই চিনের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে বৈঠক। তার আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কিন্তু একদম রিল্যাক্স লেগেছে। কালো টিশার্ট ও ক্যাজুয়াল কালো প্যান্টে খালি পায়ে বালির ওপর হাঁটতে শুরু করেন তিনি। ভোরে সমুদ্রের ধারে হাঁটার আনন্দটা উপভোগ করতে ছাড়েননি ব্যস্ত মানুষটি। আর সেই বেড়াতে বেরিয়েই তাঁর নজরে পড়ে বিষয়টি। দ্রুত একটি বড় প্লাস্টিকের প্যাকেট চেয়ে নেন তিনি। সুরক্ষা কর্মীদের একটু দূরেই দাঁড়াতে বলেন। তারপর একাই লেগে পড়েন কাজে।
কী কাজ? প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এদিন সমুদ্রের ধারে কুড়িয়ে বেড়ালেন জঞ্জাল। সমুদ্রের ধারে বেড়াতে এসে কিছু অবিবেচক মানুষের ফেলে যাওয়া জঞ্জাল। হাতে তুলে নেন অন্যের পরা চটিও। এধরনের চটি সাধারণত বিলাসবহুল হোটেলে অতিথিদের পরতে দেওয়া হয়। তেমনই চটি পড়ে সমুদ্রের ধারে বেড়াতে এসে সেগুলি ফেলেই চলে গিয়েছিলেন কেউ। এছাড়া চারধারে পড়ে থাকা প্লাস্টিকের জলের বোতল হাতে করে কুড়িয়ে নেন মোদী। তুলে নেন খেয়ে ফেলে যাওয়া প্লাস্টিকের থালা। এছাড়াও নানা ধরনের জঞ্জাল কুড়িয়ে অন্য হাতে ধরা প্লাস্টিকের প্যাকেটে জমা করতে থাকেন তিনি। এ কাজে কারও সাহায্য নেননি প্রধানমন্ত্রী।
স্বচ্ছ ভারত অভিযান প্রধানমন্ত্রীরই চালু করা একটি প্রকল্প। প্লাস্টিকমুক্ত ভারত, স্বচ্ছ ভারত তৈরি করাই তাঁর লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যে অবিচল থেকে প্রধানমন্ত্রী হয়েও তিনি নিজে হাতে কুড়িয়ে বেড়ালেন সমুদ্রের ধারে বালিতে ছড়িয়ে থাকা জঞ্জাল। তৈরি করলেন একটি দৃষ্টান্ত। স্বচ্ছ ভারত গড়তে যদি প্রধানমন্ত্রী নিজে হাতে জঞ্জাল সাফ করতে পারেন তাহলে অন্যরা নয় কেন? অন্যদিকে কেনই বা এভাবে বেপরোয়া, অবিবেচকের মত জঞ্জাল যত্রতত্র ফেলার অভ্যাস? কেন জঞ্জাল নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলার অভ্যাস তৈরি করা যাচ্ছেনা? প্রধানমন্ত্রীর এদিনের সাফাই অভিযান কিন্তু অনেক প্রশ্নের মুখে দাঁড় করাল এমন মানুষদের যাঁরা অবিবেচকের মত ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলে দিয়ে যান তাঁদের ব্যবহার করা জিনিসপত্র। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা