দিন গোনা শেষ, রাম মন্দিরে রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী
অযোধ্যায় নবনির্মিত রাম মন্দিরে রামলালার নব কলেবরে প্রাণপ্রতিষ্ঠা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এদিন সনাতনি রীতি মেনে প্রাণপ্রতিষ্ঠা সম্পূর্ণ করেন তিনি।
ইতিহাসের এক বৃত্ত সম্পূর্ণ হল সোমবার শুক্লা দ্বাদশীর পুণ্যলগ্নে। অযোধ্যায় নতুন তৈরি রাম মন্দিরে ভগবান রামের নব কলেবরে প্রাণপ্রতিষ্ঠা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এদিন বেলা ১২টার পরই মন্দির চত্বরে প্রবেশ করেন প্রধানমন্ত্রী। পৌঁছে গর্ভগৃহে প্রবেশ করেন তিনি।
সেখানে উপস্থিত ছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। প্রথমে রামলালার এতদিন যে মূর্তি রয়েছে তাঁর পুজো করেন প্রধানমন্ত্রী। গর্ভগৃহে তাঁর সঙ্গে ছিলেন উত্তরপ্রদেশের রাজ্যপাল আনন্দিবেন প্যাটেল, মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এবং সংঘ প্রধান মোহন ভাগবত। আর ছিলেন পুরোহিতেরা। বিরাজমান রামলালার পুজো সেরে প্রধানমন্ত্রী উঠে এগিয়ে যান রামলালার নতুন মূর্তির পাশে।
চলতে থাকে একের পর এক সনাতনি রীতি, ধর্মীয় আচার প্রথা মেনে পুজো। এদিন প্রাণপ্রতিষ্ঠার জন্য কিন্তু ছিল বিশেষ মুহুর্ত। মাত্র ৪৮ সেকেন্ডে সেই কাজ সম্পূর্ণ করতে হয়।
এই প্রাণপ্রতিষ্ঠার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল বিশেষ অভিজিত মুহুর্তকে। যা শুরু হয় ১২টা ২৯ মিনিট ৩ সেকেন্ডে এবং শেষ হয় ১২টা ৩০ মিনিট ৩৫ সেকেন্ডে।
এই সময়কালের মধ্যেই প্রাণপ্রতিষ্ঠা হয়। এরপর ১২টা ৩২ মিনিটে রামলালার পায়ে পদ্ম নিবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী। বেজে ওঠে শঙ্খধ্বনি। মন্ত্রোচ্চারণ হয়েই চলেছিল।
এরপর ধর্মীয় রীতি মেনে পুরোহিতের পরামর্শমত এক এক করে ধর্মীয় রীতি পালন করতে থাকেন প্রধানমন্ত্রী। ১২টা ৫৪ মিনিট থেকে ১২টা ৫৮ মিনিট পর্যন্ত আরতি করেন তিনি। তারপর পুষ্পাঞ্জলি দেন।
দুপুর ১টা ১৩ মিনিটে রামলালার মূর্তির চারধারে প্রদক্ষিণ করেন প্রধানমন্ত্রী। ১টা ১৪ মিনিটে সাষ্টাঙ্গ প্রণাম করে পুজো শেষ করেন প্রধানমন্ত্রী।
রাম মন্দিরের উদ্বোধনকে সামনে রেখে এদিন দেশের নানা প্রান্ত থেকে সাধু মহাত্মারা হাজির হয়েছিলেন অযোধ্যায়। গর্ভগৃহে যখন প্রাণপ্রতিষ্ঠা চলছে তখন তাঁরা মন্দিরের সামনে তাঁদের জন্য যে স্থান নির্ধারিত ছিল সেখানে বসেছিলেন।
ছিলেন দেশের প্রথিতযশা মানুষজনও। যেমন সস্ত্রীক উপস্থিত ছিলেন মুকেশ আম্বানি, তেমনই উপস্থিত ছিলেন অমিতাভ বচ্চন, রণবীর, আলিয়ারা।
উপস্থিত ছিলেন শচীন তেন্ডুলকর এবং আরও অনেকে। আর ছিলেন দেশের নানা প্রান্ত থেকে অযোধ্যায় হাজির হওয়া নানা বয়সের অগণিত মানুষ।
যাঁরা রাম মন্দিরে একবার প্রবেশ করতে, একবার রামলালাকে প্রণাম করতে অক্লান্ত অপেক্ষায় সকাল থেকে জমা হয়েছেন। অযোধ্যায় এই দিনকে পালন করা হচ্ছে রামের ফিরে আসা হিসাবে।
সুরক্ষার মোড়কে এদিন মুড়ে ফেলা হয়েছিল অযোধ্যা শহরকে। আকাশপথে বায়ুসেনার হেলিকপ্টার থেকে পুষ্পবর্ষণও করা হয়।
ভারতের বিভিন্ন শহরের মত কলকাতাতেও এদিন সকাল থেকেই নানা প্রান্তে ভগবান রামের পুজো হয়। অনেক জায়গায় পুজো শেষে প্রসাদ বিতরণ করা হয়।