মাটির তলার জলও নোনতা হয়ে যাবে কিছুদিন পর, কেন এবং কোথায় জানাল নাসা
মাটির তলার জল মিষ্টি জল। যা পান করা যায়। জলসেচে কাজে লাগানো যায়। সেই জলও নোনতা হয়ে যাবে। সতর্ক করলেন নাসার বিজ্ঞানীরা। কোথায় কোথায় হবে জানালেন তাঁরা।
পৃথিবীতে ২ ধরনের জল পাওয়া যায়। এক সমুদ্রের অফুরন্ত জলরাশি। যা অফুরন্ত ঠিকই, কিন্তু পানযোগ্য নয়। কারণ তা নোনতা। অন্যদিকে নদী, জলাশয়, দিঘি, পুকুরের মত দেখতে পাওয়া যায় এমন জল এবং মাটির তলায় থাকা জল, যা দেখতে পাওয়া যায়না।
এগুলি সাধারণ জল। যা পান করা যায়। জলসেচে ব্যবহার করা যায়। নিত্যপ্রয়োজনে ব্যবহার করা যায়। এখন সমুদ্রের ধারের কোনও জায়গা হলেও সেখানকার মাটির তলার জল কিন্তু নোনতা হয়না। বরং সাধারণ পানযোগ্য জল হয়।
মাটির তলার জল প্রধানত বৃষ্টির জল দ্বারা পুষ্ট হয়। মাটির তলায় যে পাথর এবং মাটি রয়েছে তা এই জলকে মাটির তলায় ধরে রাখতে সাহায্য করে। বৃষ্টির জল এভাবে মাটির তলায় ভরে থাকে।
যা প্রয়োজনে মাটির তলা থেকে তুলে মানুষ তার প্রয়োজনে ব্যবহারও করে। কিন্তু সেই জল যদি নোনতা হয়ে যায়! যদি সমুদ্রের জল তার সঙ্গে মিশে যায়! তাহলে তো তা আর পানযোগ্য থাকবেনা। সেটাই কিন্তু হতে চলেছে বলে সতর্ক করলেন নাসার বিজ্ঞানীরা।
নাসা জানাচ্ছে, ২১০০ সালের মধ্যেই পৃথিবীর ৭৫ শতাংশ উপকূলীয় এলাকার মাটির তলার জল নোনতা হয়ে যেতে পারে। তেমন পরিস্থিতিই তৈরি হতে শুরু করেছে।
সমুদ্রের ধারে থাকা মাটির তলার জল কিন্তু মিষ্টিই হয়। নোনতা নয়। সমুদ্রের জল লাগোয়া মাটি ধরে চুঁইয়ে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করে। উল্টোদিকে মাটির তলায় থাকা মিষ্টি জলও চুঁইয়ে সমুদ্র লাগোয়া মাটির দিকে আসে।
কিন্তু সমুদ্র লাগোয়া জায়গায় কোথাও সামান্য মিশলেও তা সেখানেই থেকে যায়। না মিষ্টি জল সমুদ্রে যায়, না সমুদ্রের জল মিষ্টি জলের সঙ্গে মিশে একাকার হয়ে যায়।
নাসার বিজ্ঞানীরা বলছেন সেই অবস্থা বদলে যেতে পারে আর ৭৫ বছরের মধ্যেই। এর জন্য ২টি কারণকে কাঠগড়ায় চাপিয়েছেন তাঁরা।
জলবায়ু পরিবর্তন বড় প্রভাব ফেলতে চলেছে। বিশ্ব উষ্ণায়ন এবং সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধি আগামী দিনে সমুদ্রের নোনা জলকে প্রবল চাপে উপকূলীয় এলাকার মাটির ভিতরে আরও বেশি করে প্রবেশ করাতে থাকবে।
ফলে তা একসময় মাটির তলার জলের সঙ্গে মিশে যাবে। উপকূলীয় এলাকার মাটির তলার মিষ্টি জলও নোনতা হয়ে যাবে। যা পানযোগ্য বা অন্য কোনও কাজে লাগানোর অবস্থায় আর থাকবেনা।