চিন্তা বাড়াল রেকর্ড, ওজোনস্তরে মহাদেশ সমান গর্ত
ওজোনস্তরে গর্ত হওয়া মানবসভ্যতার জন্য চিন্তার। সেই চিন্তা আরও বাড়িয়ে দিল ওজোনস্তরে একটি মহাদেশ সমান অতিকায় গর্ত।
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে বিভিন্ন স্তর রয়েছে। যার মধ্যে একটি স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার। এই স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার–এ অবস্থান করে ওজোনস্তর। পৃথিবীকে মুড়ে রেখেছে এই স্তর, যা মূলত সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে বিশ্বকে রক্ষা করে।
কুমেরুর ওপরও রয়েছে এই ওজোনস্তর। প্রতিবছর দেখা যায় সেপ্টেম্বরের পর থেকে সেখানে গর্ত তৈরি হয়। শব্দটা গর্ত হলেও আসলে যেটা হয় তা হল ওজোনস্তর পাতলা হয়ে যায়। ফলে তা অতিবেগুনি রশ্মিকে সেভাবে রুখে উঠতে পারেনা।
সেটা এবার এতটাই বিশাল এলাকা জুড়ে রয়েছে যে তা দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের সমান। এত বিশাল এলাকা জুড়ে ওজোনস্তরে গর্ত একটি রেকর্ড। ১৯৭৯ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত যতবার ওজোনস্তরে অতিকায় গর্তের রেকর্ড রয়েছে এবারের গর্ত তার মধ্যে ১৩ তম।
বিশেষজ্ঞেরা বলছেন কুমেরু বা দক্ষিণ মেরুতে এবার শীত পড়েছে অতিরিক্ত পরিমাণ। যা দীর্ঘায়িতও হয়েছে। কুমেরুতে ৫ মাস অন্ধকার থাকে। সূর্যের দেখা মেলেনা।
সেপ্টেম্বর থেকে ফের একটু একটু করে সূর্যের দেখা মেলে। নভেম্বর থেকে সেখানে গ্রীষ্ম। তখনই বিভিন্ন দেশের গবেষকরা ফিরে যান কুমেরুতে।
গবেষকরা জানাচ্ছেন, মানুষের তৈরি বিভিন্ন জিনিস থেকে ক্লোরিন ও ব্রোমিন নির্গত হয়। যা জমা হয় মেরু মেঘ হয়ে। ভূপৃষ্ঠ থেকে অনেক ওপরে তা জমা হয়।
এরপর মেরু অঞ্চলে যখন শীতের অন্ধকার কেটে সূর্যের দেখা মেলে তখন সূর্যের আলো পড়ে ওই ক্লোরিন ও ব্রোমিনের তৈরি মেঘে। সূর্যের আলোয় সেখানে রাসায়নিক বিক্রিয়া শুরু হয়।
সেই বিক্রিয়া সরাসরি প্রভাব ফেলে ওজোনস্তরে। পাতলা করতে থাকে ওজোনস্তর। যত মেরুতে ঠান্ডা বেশি হবে বা দীর্ঘায়িত হবে ততই এই ক্লোরিন ও ব্রোমিনের মেঘ জমাট বাঁধে। যা পরে রোদ পেয়ে নষ্ট করতে থাকে ওজোনস্তর।
এবার কুমেরুতে স্বাভাবিকের চেয়েও বেশি ঠান্ডা ও অস্বাভাবিক সময় ধরে শীতকাল বজায় থেকেছে। ফলে ওজোনস্তরে তার প্রভাব পড়েছে। গত ৭ অক্টোবর সবচেয়ে বেশি এলাকা জুড়ে ছিল ওই ওজোনস্তরের ফাটল। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা