বাবা, মা ও দিদি রহস্যজনকভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেও, পুজোর প্রসাদ খেতে চেয়ে বাড়ি না যাওয়ায় বেঁচে গেল ৩ বছরের শিশু। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দিল্লিতে।
গত শনিবার সকালে দিদি রাচির সঙ্গে পরিচিত এক প্রতিবেশির বাড়ি যায় খুদে ঋষভ। প্রতিবেশির দাবি, কিছুক্ষণ পর ২ সন্তানের মা ললিতাদেবী আসেন তাঁদের বাড়ি। জরুরি কাজের অজুহাত দিয়ে ২ ভাই-বোনকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য পীড়াপীড়ি করতে থাকেন তিনি। দিদি মায়ের সঙ্গে বাড়ি ফিরতে রাজি হলেও বেঁকে বসে ঋষভ। প্রসাদ না খেয়ে বাড়ি যাবে না বলে সে সাফ জানিয়ে দেয় মাকে।
প্রতিবেশির আরও দাবি, ছেলেকে আর জোর না করে মেয়েকে নিয়ে বাড়ি চলে যান ওই মহিলা। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান গোটা পরিবারই বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে। বাড়ি গিয়ে সম্ভবত প্রথমে মেয়েকে বিষের বড়ি খাওয়ান তার মা। তারপর স্বামী ভিকির সঙ্গে নিজেও বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেন। ৩ জনকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করেন। তবে এই মৃত্যু আত্মহত্যাই, নাকি এর পিছনে অন্য কোনও রহস্য লুকিয়ে আছে তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
মৃত ব্যক্তির ভাইয়ের দাবি, সম্পত্তি নিয়ে অনেকদিন ধরে বাবা কিশোরীলালের সঙ্গে ঝামেলা চলছিল দাদা ভিকির। তাঁর দাবি, দিল্লির গোবিন্দপুরী এলাকার পৈতৃক ভিটের ২টি তলাই তাঁর নামে লিখে দিতে হবে। ছেলের এমন অন্যায্য দাবি মানতে চাননি ক্যান্সার আক্রান্ত বৃদ্ধ। মৃতের ভাইয়ের অভিযোগ, বাড়ি তাঁর নামে লিখে না দেওয়ায় বাবাকে সপরিবারে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করার হুমকি দিয়েছিল দাদা।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি বিষ খেয়ে ভিকি ও তাঁর স্ত্রী আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছিলেন বলে দাবি মৃতের ভাইয়ের। সেবার প্রাণে বেঁচে যান তাঁরা। মৃতের পরিবারের দাবি, শনিবার সকালেও সম্পত্তির ভাগ নিয়ে মা-বাবার সঙ্গে ঝামেলা হয় ভিকি ও তাঁর স্ত্রীর। পুলিশের ধারণা, বাড়ি নিজেদের নামে না হওয়ায় প্রবল ক্ষোভে হঠকারী সিদ্ধান্ত নেন ভিকি ও তাঁর স্ত্রী। যার জেরে ৩ জনে একসঙ্গে আত্মহত্যা করে বলে অনুমান পুলিশের। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
মা, বাবা, দিদি কেউ আর বেঁচে নেই। ছোট্ট ঋষভের এখন ভবিষ্যৎ কি তাই নিয়েই চিন্তিত তার পরিবার। তবে ২ সন্তানের মতই ঋষভকে তিনি মানুষ করবেন বলে জানিয়েছেন মৃতের ভাই রাকেশ কুমার।