ঘড়ির কাঁটায় তখন সকাল ৭টা বেজে ১০ মিনিট। উত্তরপ্রদেশের কুশিনগরের একটি প্রহরীবিহীন লেভেল ক্রসিংয়ের কাছে পৌঁছেছিল গোরখপুর-সিওয়ান প্যাসেঞ্জার। এদিকে ঠিক সেই সময়েই ২৫ জন পড়ুয়াকে নিয়ে ক্রসিং বরাবর রেললাইন পার হতে যায় স্কুলভ্যানের চালক। যার পরিণতিও হয় মর্মান্তিক। বৃহস্পতিবার সকালে লেভেল ক্রসিং পার হতে যাওয়া ভ্যান লাইনের ওপর পৌঁছতেই দুরন্ত গতির প্যাসেঞ্জার ট্রেনটি এসে ধাক্কা মারে তাতে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ভ্যান চালক ও ১৩ জন পড়ুয়ার। ট্রেনের ধাক্কায় দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া হলুদ স্কুল ভ্যানটিকে পরে পুলিশ এসে লাইনের ওপর থেকে সরিয়ে নিয়ে যায়। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনার পর উত্তরপ্রদেশের কুশিনগর জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
গাড়ি চালকদের সতর্ক করতে ওই লেভেল ক্রসিংয়ে ‘গেট মিত্র’ ছিলেন। তাঁর দাবি, তিনি চেঁচিয়ে চালককে লাইন পার হতে নিষেধ করেন। কিন্তু কানে হেডফোন লাগানো চালক সে কথা শুনতেও পায়নি। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, চালক হয়তো ভেবেছিল ট্রেন আসতে আসতে ঠিকই সে গাড়ি নিয়ে লাইন পার করে যাবে। কিন্তু সেই ভয়ংকর ঝুঁকি কেড়ে নিল ১৩ পড়ুয়ার প্রাণ। হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন ৭ পড়ুয়া। পড়ুয়াদের অধিকাংশের বয়স ১০ বছরের নিচে। দুর্ঘটনার খবরে গভীর শোকপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। ঘটনাস্থলে হাজির হন তিনি। ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন যোগী আদিত্যনাথ। পাশাপাশি তিনি সাফ জানিয়েছেন তদন্তে যাকে বা যাদের দোষী হিসাবে পাওয়া যাবে তাদের কঠোরতম শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। মৃত শিশুদের পরিবারপিছু ২ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। ঘটনার খবর পেয়ে শোক ব্যক্ত করেছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।