গত ২৩ ফেব্রুয়ারির ঘটনা। ওড়িশার বলাঙ্গির জেলার পাটনাগড়ের বাড়িতে বসে প্রীতিভোজ অনুষ্ঠানে অতিথিদের দেওয়া উপহারের মোড়ক খুলে দেখছিলেন সৌম্য শেখর শাহ, তাঁর স্ত্রী ও ঠাকুমা। আচমকাই ১টি উপহারের বাক্স খুলতে প্রবল বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে চারদিক। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় যুবক ও তাঁর ঠাকুমার। আশঙ্কাজনক অবস্থায় নববধূকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কে বা কারা নবদম্পতিকে বিস্ফোরকে ঠাসা উপহার পাঠাল তার তদন্তে নামে পুলিশ। ২ মাস তদন্ত চালানোর পর অবশেষে মাস্টারমাইন্ডের খোঁজ পান তাঁরা।
তদন্তে পুলিশ জানতে পারে বিস্ফোরক ঠাসা উপহারটি পাঠিয়েছিল ওড়িশার জ্যোতি বিকাশ জুনিয়র কলেজের অধ্যাপক পুঞ্জিলাল মেহর। দীপাবলিতে বাজি তৈরির জন্য কেনা মশলা দিয়ে নিজে হাতে বোমা বানিয়ে তা পুঞ্জিলাল ক্যুরিয়ারে নবদম্পতিকে পাঠায় বলে অনুমান পুলিশের। অভিযুক্তকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মৃত সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের পরিবারের দাবি, গত বছর মে মাসে পুঞ্জিলাল মেহরের জায়গায় কলেজের নতুন অধ্যক্ষ হয়ে বসেন ইতিহাসের অধ্যাপিকা সংযুক্তা শাহ। পদ হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার বিষয়টি মন থেকে মানতে পারেনি পুঞ্জিলাল। অভিযোগ, কলেজে বারবার সংযুক্তা দেবীকে অপদস্থ করার চেষ্টা করেছিল অভিযুক্ত অধ্যাপক৷ কিন্তু তাতেও রাগ কমেনি৷
পুলিশ জানাচ্ছে প্রতিহিংসাবশত অভিযুক্ত বিস্ফোরণে অধ্যাপিকার গোটা পরিবারকে শেষ করে দেওয়ার পরিকল্পনা এঁটেছিল৷ সেইমত অধ্যাপিকার ছেলের প্রীতিভোজের অনুষ্ঠানের দিন কলেজে ক্লাস করার পর নিমন্ত্রণ বাড়ি পৌঁছায় অধ্যাপক। তারপর সিসিটিভির নজর এড়াতে এক অটো চালকের সাহায্যে পার্সেলটি সে ক্যুরিয়ার সার্ভিসে পাঠায়। পরে উপহার দেখার সময় যা ফেটে মৃত্যু হয় অধ্যাপিকার ছেলে ও শাশুড়ির। গুরুতর জখম হন তাঁর পুত্রবধূ। অভিযুক্তের মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানিয়েছেন মৃতদের পরিবার।