National

সাংবাদিক জে দে হত্যা মামলায় ছোটা রাজন সহ ৯ জনের ‌যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

বুধবার সকালে মুম্বইয়ের একটি আদালতে সাংবাদিক জ্যোতির্ময় দে হত্যাকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত হয় কুখ্যাত গ্যাংস্টার ছোটা রাজন। বাকি ছিল সাজা ঘোষণা। বিকেলে সাজা ঘোষণাও হয়ে গেল। ছোটা রাজনের ‌যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। শুধু ছোটা রাজন বলেই নয়, এই মামলায় আরও ৮ জন দোষী সাব্যস্তকেও একই সাজা শুনিয়েছে আদালত। যারমধ্যে সুপারি কিলার সতীশ কালিয়াও আছে। তবে একই মামলায় এদিন বেকসুর খালাস পেয়েছেন সাংবাদিক জে দে হত্যা মামলায় ২ অভিযুক্ত জোসেফ পলসেন এবং জিগনা ভোরা। জ্যোতির্ময় দে সম্পর্কে তথ্য গ্যাংস্টারের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য গ্রেফতার করা হয় ‘এশিয়ান এজ’ সংবাদপত্রের অন্যতম সাংবাদিক জিগনা ভোরাকে। পেশাগত শত্রুতার জেরে তিনি গ্যাংস্টারের সাহায্যে সাংবাদিক জে দে-কে হত্যায় মদত দেন বলে অভিযোগ ছিল। প্রমাণ না থাকায় সেই অভিযোগ থেকে এদিন তাঁকে রেহাই দিল আদালত।

অপরাধ জগতের অন্ধকারে মোড়া গোপন খবর নখদর্পণে ছিল তাঁর। নির্ভীক সাংবাদিকতা ছিল তাঁর সবচেয়ে বড় অস্ত্র। তবে লাইমলাইটে আসার ঘোরতর বিরোধী ছিলেন। বড় একটা অনুষ্ঠানে যেতেন না। তুলতেন না ছবিও। সেই সাংবাদিক জ্যোতির্ময় দে বা যিনি অনেক বেশি পরিচিত ছিলেন জে দে নামে তাঁকে খুন হতে হয় ২০১১-র ১১ জুন। মুম্বইয়ের পাওয়াইয়ের বাড়ি থেকে স্কুটারে চেপে বার হন ‘মিড ডে’ সংবাদপত্রের ক্রাইম রিপোর্টার জে দে। স্কুটারে যাওয়ার সময় বাইকে করে দুষ্কৃতীরা এসে পিছন থেকে গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেয় তাঁর শরীর। সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও বাঁচানো যায়নি ৫৬ বছরের সাংবাদিককে। তাঁর মৃত্যু সেইসময় ব্যাপক আলোড়ন ফেলে দেয় গোটা দেশে।


কুখ্যাত গ্যাংস্টার ছোটা রাজনকে নিয়ে নিজের বইয়ে হাঁড়ির খবর ফাঁস করার কথা ছিল জে দে-র। তার আগেই খুন হন তিনি। তদন্তে নেমে ডন ছোটা রাজনের নাম পায় পুলিশ। ছোটা রাজনের সন্দেহ ছিল জে দে দাউদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। ডি কোম্পানির পরামর্শেই তার সম্বন্ধে বই লিখছেন। সেই সন্দেহেই জে দে-কে খুনের ছক কষে সে। তদন্তে এমনই জানতে পারে পুলিশ। অবশেষে ইন্দোনেশিয়ার বালিতে গা ঢাকা দেওয়া ডন ছোটা রাজনকে ২০১৫-য় পাকড়াও করে দিল্লির তিহার জেলে বন্দি করা হয়। তারপর থেকে সেখানেই রয়েছে ছোটা রাজন। জে দে হত্যাকাণ্ডে মোট ১৩ জন অভিযুক্তের নামে মামলা দায়ের করা হয়। তারমধ্যে ১২ জন গ্রেফতার হলেও ১ জন এখনও ফেরার। মামলা চলাকালীন ১ জনের মৃত্যু হয়। বাকি ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা চলছিল। যারমধ্যে ২ জন এদিন বেকসুর খালাস পেলেন। বাকি ছোটা রাজন সহ ৯ জনের সাজা ঘোষণা করল আদালত। আদালতের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তারা উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছেন ছোটা রাজনের আইনজীবী।


Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button