রাজ্যে যেসব দরিদ্র মানুষ প্রিয়জনের মৃত্যু হলে তাঁর শবদেহ অর্থাভাবে হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে গাড়িতে বাড়ি নিয়ে আসতে পারেন না তাঁদের জন্য মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক চালু করেছেন ‘মহাপরায়ণ’ প্রকল্প। এই প্রকল্পে ওড়িশার ৩৭টি হাসপাতালে রাখা থাকছে ৪০টি শববাহী গাড়ি। যাতে বিনামূল্যে দরিদ্র মানুষজন প্রিয়জনের দেহ বাড়ি আনতে পারবেন। কিন্তু বাস্তবে এই সুযোগ চেয়েও পেলেন না এক হতদরিদ্র মানুষ।
ওড়িশার কালাহান্ডি জেলার বাসিন্দা দানা মাঝি তাঁর টিবিতে আক্রান্ত স্ত্রীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি করেছিলেন ভবানীপাটনা হাসপাতালে। সেখানেই ৪২ বছরের আমাংদেইয়ের মৃত্যু হয়। দানা মাঝির দাবি, স্ত্রীর মৃত্যুর পর শোকস্তব্ধ অবস্থায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে একটা শববাহী গাড়ি চেয়েছিলেন তিনি। কারণ তাঁর বাড়ি হাসপাতাল থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে। যেখানে পৌঁছতে শববাহী গাড়ি ভাড়া করার মত আর্থিক সামর্থ্য তাঁর নেই। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সাহায্য করেনি। অগত্যা মৃত স্ত্রীকে কাপড়ে জড়িয়ে কাঁধে ফেলে হাঁটা লাগান দানা। সঙ্গে ছিলেন তাঁর একমাত্র মেয়ে।
প্রায় ১০ কিলোমিটার পথ এভাবেই স্ত্রীকে কাঁধে নিয়ে হেঁটে যাওয়ার পর কয়েকজন স্থানীয় সাংবাদিকের বিষয়টি নজর কাড়ে। তাঁরা দানা মাঝিকে বিশ্রাম নিতে বলে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেন। সাংবাদিকদের কাছ থেকে একথা শুনতে পেয়ে নড়ে চড়ে বসে প্রশাসন। ব্যবস্থা হয় শববাহী গাড়ির। অবশেষে তাতে করে বাকি ৪০ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে মৃত স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ফেরেন দানা মাঝি।