গতবারের চেয়েও বেশি ভোট পড়ল কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনে। এই নির্বাচন কংগ্রেসের জন্য খুব বড় পরীক্ষা। প্রায় সব রাজ্যই হাতছাড়া হওয়ার পর কর্ণাটকের মত গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য নিজেদের দখলে রাখতে মরিয়া ছিল কংগ্রেস। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন কংগ্রেসকে সরিয়ে সেখানে বিজেপি নিজেদের শাসন কায়েম করতে বদ্ধপরিকর। একাধারে যেখানে প্রচারে রাহুল গান্ধীকে কংগ্রেস জন্য একের পর এক জনসভা করতে দেখেছেন কর্ণাটকবাসী, সেখানে কম যাননি স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। তিনিও তালে তাল মিলিয়ে জনসভা করে গেছেন।
শনিবার সেই প্রচারযুদ্ধের ফলাফল বাক্সবন্দি হল। কর্ণাটকের মানুষ তাঁদের রায় দিলেন। আর কর্ণাটকের মানুষজন যে এবার তাঁদের রায় দেওয়া নিয়ে যথেষ্ট উৎসাহী ছিলেন তা এবারের ভোটদানের শতাংশের হার থেকেই পরিস্কার। কর্ণাটকে এখন প্রবল গরম। অনেক জায়গায় পারদ ছুঁয়েছে ৪৩ ডিগ্রি। ফলে শনিবার সকালে ভোটগ্রহণ শুরু হতেই রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন বুথে ছিল লম্বা লাইন। সকলেই চাইছিলেন সূর্য মাথার ওপর ওঠার আগেই ভোট দিয়ে ঘরে ফিরে যেতে। তাই সকালে বিভিন্ন বুথে দরজা খোলার আগেই যেখানে ভোটারদের লম্বা লাইন নজর কেড়েছে। সেখানে বেলা বাড়ার পর অনেক বুথে হাতে গোনা ভোটার এসেছেন ভোট দিতে। যদিও রোদ পড়তে ফের বিকেলের দিকে ভিড় বাড়তে থাকে। বিকেল ৫টা পর্যন্ত ছিল ভোটগ্রহণপর্ব। কিন্তু ৫টার পরও বিভিন্ন বুথে লাইন চোখে পড়েছে। ফলে যেখানে ৫টায় ৬৪ শতাংশ ভোট পড়েছিল। সেখানে ভোটপর্ব সব বুথে সমাপ্ত হওয়ার পর তা দাঁড়ায় ৭০ শতাংশে।
যেখানে গোটা রাজ্য আগুন গরমে নাজেহাল, সেখানে আবার হুবলি কেন্দ্রের অনেক জায়গায় প্রবল বৃষ্টি নামে এদিন। যার জেরে ভোটগ্রহণ বিঘ্নিত হয়। ভোটাররা অনেকেই দীর্ঘক্ষণ বাড়ি থেকে বার হতে পারেননি।
কর্ণাটক বিধানসভা ২২৫ আসনের। যারমধ্যে এদিন ভোট হয়েছে ২২২টি আসনে। একটি আসন রাজা রাজেশ্বরী নগরে ভোটের আগেই প্রচুর পরিমাণে ভুয়ো ভোটার কার্ড বাজেয়াপ্ত হয়েছে। ফলে সেখানে ভোট পিছিয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এখানে ভোট হবে আগামী ২৮ মে।
এবার কর্ণাটকে দ্বিমুখী লড়াই। কংগ্রেস লড়ছে নিজেদের শাসন ধরে রাখতে। আর বিজেপি এই দক্ষিণী রাজ্যে কংগ্রেসকে পরাস্ত করে নিজেদের সরকার গরতে মরিয়া। এই অবস্থায় একটি ত্রিমুখী তত্ত্ব সামনে আনছেন বিশেষজ্ঞেরা। যেখানে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবেগৌড়ার দল জনতা দল সেকুলার একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হিসাবে সামনে আসছে। কারণ অনেক রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞই মনে করছেন কর্ণাটকে আগামী দিনে কার শাসন কায়েম হবে তা নির্ধারণ করতে জেডিএস কিংমেকারের ভূমিকা নেবে। তবে সব কিছুই পরিস্কার হয়ে যাবে আগামী ১৫ মে। ওদিন সকাল থেকে শুরু হবে কর্ণাটকের ফলাফল ঘোষণা।