
কয়েকদিনের দড়ি টানাটানি শেষ। যাবতীয় জল্পনার ইতি ঘটিয়ে কর্ণাটকে আস্থা ভোটের আগেই ইস্তফা দিলেন বিজেপির সদ্য মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়া ইয়েদুরাপ্পা। শপথের ২ দিন পরেই ইস্তফা দিলেন তিনি। এদিন দুপুরে আস্থা ভোটের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পূর্ণ হলেও শেষ মুহুর্তে আস্থা ভোটের আগে বক্তব্য রাখতে উঠে আবেগপ্রবণ বক্তব্যের পর ইস্তফা দিলেন ইয়েদুরাপ্পা। ফলে দরকার পড়ল না আস্থা ভোটের। খুব স্বাভাবিকভাবেই এটা কংগ্রেস ও জেডিএসের জন্য বড় জয়। এদিন বিধান সুধা থেকে সোজা রাজ্যপালের কাছে ইস্তফা দিতে যান ইয়েদুরাপ্পা। এবার স্বাভাবিক নিয়মেই কংগ্রেস-জেডিএস জোটকে ডেকে পাঠাবেন রাজ্যপাল। ফলে কুমারস্বামীর মুখ্যমন্ত্রী হওয়ায় কোনও বাধা রইল না। বড় ধাক্কা খেল বিজেপি।
কর্ণাটকে আস্থা ভোট ঘিরে এদিন সকাল থেকেই সরগরম ছিল রাজনৈতিক মহল। শুধু কর্ণাটক বলেই নয়, গোটা দেশের নজর ছিল কর্ণাটকের দিকে। এদিন সকালে কংগ্রেসের দাবি নস্যাৎ করে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয় কেজি বোপাইয়াই প্রোটেম স্পিকার হিসাবে কর্ণাটক বিধানসভা ‘বিধান সুধা’য় আস্থা ভোট সঞ্চালন করবেন। কংগ্রেসের দাবি ছিল যেহেতু আগে থেকেই বোপাইয়া বিতর্কিত হিসাবে পরিচিত। তাই তাঁকে প্রোটেম স্পিকার থেকে সরানো হোক। সুপ্রিম কোর্ট জানায় তা করতে গেলে বোপাইয়ার বক্তব্য কোর্টে পেশ হওয়া জরুরি। কিন্তু তা করতে গেলে এদিনের আস্থা ভোট স্থগিত করতে হবে। যা আদালত চায়নি। তবে স্বচ্ছতার প্রশ্নে আদালত এদিন কংগ্রেসের দাবি মেনে সব টিভি চ্যানেলকে আস্থা ভোটের সরাসরি সম্প্রচারের অধিকার দেয়।
এদিকে ভোটের আগে থেকে কংগ্রেস ও জেডিএস তাদের বিধায়কদের একটি রিসর্টে আলাদা করে রেখেছিল। কার্যত নজরবন্দি ছিলেন তাঁরা। যাতে তাঁদের কেউ প্রলোভন দেখাতে না পারে। এই অবস্থায় এদিন সকালে আবার কংগ্রেসের ২ বিধায়ক আনন্দ সিং ও প্রতাপ গৌড়াকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তা নিয়ে রীতিমত শোরগোল পড়ে যায়। এমনকি পুলিশও তাঁদের খোঁজ শুরু করে। কিন্তু সকলকে অবাক করে এদিন আস্থা ভোট শুরুর এক ঘণ্টা আগে তাঁরা বিধান সুধায় হাজির হন। বসে পড়েন কংগ্রেসের দিকে।
এদিন সকালেই সব বিধায়ককে শপথবাক্য পাঠ করানো হয়েছিল। এঁদের ২ জনকে তখনই শপথবাক্য পাঠ করান হয়। ৪টের সময় ছিল আস্থা ভোট। তার আগে ইয়েদুরাপ্পা বক্তব্য পেশ করেন। বলার সময়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন তিনি। অন্যদিকে দর্শকের আসনে দেখা যায় কংগ্রেসের মল্লিকার্জুন খাড়গে, গুলাম নবি আজাদ ও অশোক গেহলটকে পাশাপাশি বসতে। আর ঠিক তাঁদের পাশেই বসেন বিজেপির অনন্ত কুমার ও সদানন্দ গৌড়া। ২ যুযুধান দলের নেতাদের খোশগল্পও করতে দেখা যায়। যা এইরকম স্নায়ুর চাপের মুহুর্তে রাজনৈতিক সৌজন্যের অসাধারণ উদাহরণ সামনে আনে।