
ফের সামনে এল অমানবিকতার ছবি। কালাহান্ডি, বালেশ্বরের পর এবার মধ্যপ্রদেশের দামো। সূত্রের খবর, ৫ দিন আগে একটি শিশু কন্যার জন্ম দেন এক মহিলা। ৫ দিন পর গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। হাসপাতালে নিয়ে যেতে অসুস্থ স্ত্রী, সদ্যোজাত কন্যা ও ৫ বছরের পুত্রকে নিয়ে বাসে চেপে বসেন স্বামী রাম সিং। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত বাসেই মৃত্যু হয় ওই মহিলার। বাস তখন ঘন জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে গন্তব্যে চলেছে। অভিযোগ এই অবস্থায় আচমকাই বাস দাঁড় করিয়ে গাড়ির চালক মৃত স্ত্রী সহ রাম সিং, তাঁর দুধের সন্তান ও নাবালক ছেলেকে বাস থেকে নামিয়ে দেন। রাম সিংয়ের কোনও অনুরোধেই কান দেননি তিনি। জঙ্গলের মাঝে রাস্তার মধ্যে ৫ বছরের শিশু কন্যাকে হাতে নিয়ে অসহায়ের মত দাঁড়িয়ে থাকেন রাম সিং। সামনে পড়ে মৃত স্ত্রীর দেহ। পাশে দাঁড়িয়ে ৫ বছরের ছেলে। একের পর এক গাড়ি পাশ দিয়ে চলে গেছে। কেউ ফিরেও তাকায়নি। দিশেহারা রাম সিংয়ের তখন মাথা কাজ করছে না। এই অবস্থায় মৃত স্ত্রী, বাচ্চাদের নিয়ে জঙ্গলের মাঝে খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে কী করবেন, কোথায় যাবেন কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলেন না। কোনও গাড়িকে দাঁড়াতে বললেও তারা দাঁড়ায়নি। অবশেষে এক আইনজীবী বাইকে করে যাওয়ার সময় দাঁড়ান। জিজ্ঞেস করেন কী হয়েছে। সব শুনে তিনিই পুলিশে ফোন করেন। কিন্তু, পুলিশ সব শুনেও গুরুত্ব দেয়নি বলে অভিযোগ। অগত্যা ওই আইনজীবী নিজেই অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে রাম সিংকে স্ত্রীর দেহ সহ সন্তানদের নিয়ে গ্রামে ফেরার বন্দোবস্ত করে দেন। এই অমানবিক ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তে সারা দেশ জুড়ে ছি, ছি শুরু হয়েছে। এদিকে ওই বাসের চালকের দাবি, তিনি তাঁর নিজের ইচ্ছায় রাম সিংদের বাস থেকে নামাননি। অন্য যাত্রীরাই মৃতদেহের সঙ্গে যাবেন না বলে জিদ ধরেন। তাঁরা মহিলার দেহ সহ রাম সিংদের নামিয়ে দেওয়ার জন্যও চাপ দেন। তাই বাধ্য হয়েই নাকি তাঁকে ওই পদক্ষেপ করতে হয়েছে। দুধের শিশুকে কোলে নিয়ে সদ্য স্ত্রী হারানো শোকস্তব্ধ রাম সিং এখনও বুঝে উঠতে পারছেন না ওখানে আরও কিছুক্ষণ ৫ দিনের শিশু আর ছোট্ট ছেলেটাকে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হলে কী হত!