National

পেনশন হাতাতে মায়ের দেহ সংরক্ষণ! অভিযোগের আঙুল ৪ ছেলের দিকে

এ যেন একটুকরো বেহালার জেমস লং সরণী। যার খোঁজ মিলল উত্তরপ্রদেশের বারাণসীর কবীর নগর এলাকায়। এই এলাকায় পুত্র পুত্রবধূদের নিয়ে সুখের সংসার ছিল স্বামীহারা অমরাবতী দেবীর। চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি ভরা সংসার ফেলে পরলোকগমন করেন অসুস্থ প্রবীণা। কিন্তু মরেও তিনি মরলেন না। বেঁচে রইলেন সরকারি খাতায় কলমে। ৪ ছেলে মিলে তাঁকে বাঁচিয়ে রাখল। যার পিছনে ছিল একটাই উদ্দেশ্য। মায়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা হওয়া ১৩ হাজার টাকার পেনশন আত্মসাৎ। অভিযোগ, সেই কারণেই মায়ের দেহ ৫ মাস ঘরে রেখে স্বাভাবিক জীবনযাপন করছিল তারা। সম্প্রতি তাদের কুকীর্তির পর্দা ফাঁস করে দেন এক পরিচিত। স্থানীয় থানায় ফোন করে তিনি জানান, মায়ের দেহ সৎকার না করে তা ঘরে রেখে দিয়েছে ছেলেরা। খবর পেয়ে গত বুধবার অমরাবতী দেবীর বাড়ি হানা দেয় পুলিশ। ঘরের ভিতর তল্লাশি চালাতেই দেখা যায়, খবরে কোনও ভুল ছিলনা।। সত্যিই একটি ঘরে রাসায়নিক দিয়ে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে ৭০ বছরের বৃদ্ধার মরদেহ। ঘর থেকে উদ্ধার হয় অমরাবতী দেবীর সই করা পাঁচটি ব্ল্যাঙ্ক চেক। মৃতার দেহটি ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে পুলিশ।

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, মৃতার ৫ ছেলে ও ১ মেয়ে। মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ১ ছেলে অন্য জায়গায় থাকে। বাকি ৪ জন থাকে মায়ের সঙ্গে। তাদের মধ্যে ২ জন চাকুরিজীবী। আর ২ জনের উপার্জন নেই। স্বামী দয়া প্রসাদের মৃত্যুর পর বৃদ্ধা প্রতি মাসে পেনশন পেতেন। পুলিশের ধারণা, টাকার লোভে অভিযুক্তরা পরিকল্পনা করে এমন কাজ করেছে। মৃতার ৪ ছেলেকেই জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। বৃদ্ধার বড় ছেলের দাবি, জানুয়ারিতে মা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে শ্রী সুন্দরলাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় তাঁকে ফের বাড়ি নিয়ে আসা হয়। আর তার কিছুদিন পরেই মা কোমায় চলে যান। তাই তারা এতদিন মাকে ঘরে রেখে সেবা যত্ন করে এসেছে বলে দাবি মৃতার ছেলেদের। কিন্তু হাসপাতাল থেকে ফিরে কেন পরিবারের তরফে বৃদ্ধার মৃত্যুর খবর জানানো হয়েছিল প্রথমে? কেন কোমায় চলে যাওয়ার পর বৃদ্ধাকে হাসপাতালে পাঠানো হল না? সে কথার জবাব দিতে পারেনি অভিযুক্তরা। স্বামীদের কথায় সমর্থন জানানোয় গোটা ঘটনার সঙ্গে মৃতার পুত্রবধূরাও জড়িত বলে সন্দেহ করছে পুলিশ। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। কোন প্রক্রিয়ায় এই ৫ মাস বৃদ্ধার পেনশন তাঁর ৪ ছেলে তুলত তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।



Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button