ছোট থেকেই মা কালীর বেজায় ভক্ত ছিল কালুয়া। তিন কূলে কেউ নেই তাঁর। অনাথ আশ্রমেই বড় হয়ে ওঠা। যত দিন গেছে, ততই মা-বাবার স্নেহ বঞ্চিত কালুয়ার ভক্তি, শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস বেড়েই গিয়েছে মা কালীর প্রতি। সেই পরম ভক্তি ও ভালোবাসার টানেই হিমাচল প্রদেশের ধরমশালায় পাহাড়ের কোলে অবস্থিত কালকাজি মন্দিরে থাকত সে। দিনের অধিকাংশ সময় কাটাত রূপান্তরকামীদের সঙ্গে। নতুবা, মন্দিরের আশেপাশেই দেখা মিলত তাঁর। কিন্তু গত ২২ মে-র পর থেকে হঠাৎ বেপাত্তা হয়ে যায় কালীভক্ত কালুয়া। পরের দিন অর্থাৎ ২৩ মে ধরমশালার একটি জঙ্গল থেকে উদ্ধার হয় তাঁর ক্ষতবিক্ষত দেহ। মৃতের মাথা, বুক, মুখে ধারালো অস্ত্র দিয়ে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশের হাতে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
মৃত যুবকের পরিচিতরা জানিয়েছেন, কালীভক্ত কালুয়া প্রতি মঙ্গল ও শনিবার কালী সেজে এলাকায় ঘুরে বেড়াত। কালো সালোয়ার কামিজ এবং লাল ওড়না পরিহিত কালুয়ার বহুরূপী সাজ এলাকাবাসী ও পর্যটকদের আনন্দ দিত। অভিযোগ, কালুয়ার পুরুষ হয়ে দেবীর মত সাজসজ্জার ব্যাপারটা ভালো চোখে নেয়নি কয়েকজন। যারমধ্যে ৪ সন্দেহভাজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। জেরায় তারা কালীভক্ত যুবককে খুনের কথা স্বীকার করেছে বলে জানাচ্ছে পুলিশ। অভিযুক্তদের দাবি, নিছক মজা করার জন্য কালুয়াকে স্থানীয় জঙ্গলে টেনে নিয়ে যায় তারা। সঙ্গে ছিল আরও ৩ জন নাবালক। তারা সকলে ঐদিন মদ্যপান করেছিল বলে স্বীকার করেছে। মদের নেশায় তারা কালুয়াকে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে খুন করে। এরপর যুবকের দেহ জঙ্গলের মধ্যে ফেলে চম্পট দেয় তারা। ধৃতদের বয়ান অনুসারে জঙ্গলে অভিযান চালায় পুলিশ। সেখান থেকে কালী ভক্ত যুবকের দেহ ও ৫ টি বাইক উদ্ধার করে পুলিশ। অভিযুক্ত ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পরে দিল্লির গোবিন্দপুরী এলাকা থেকে অভিযুক্ত বাকি ৩ কিশোরকে আটক করে জেরা শুরু করছেন তদন্তকারীরা।